নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃতীয় স্তরে দেশ। গোষ্টি সংক্রমনের আশংকায় কাঁপছে গোটা দেশ। আক্রান্তের সংখ্যা এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অবস্থা সামাল দিতে কালঘাম ছুটছে পুলিশ, প্রশাসন আর স্বাস্থ্য কর্মীদের। কিন্তু তাতে গা নেই পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা শহরের ‘বেতাজ বাদশা’দের। বাইকের পেছনে পরী কিংবা হুরী রুপী ‘গার্ল ফ্রেন্ড’ অথবা ‘বিবি’ নিয়ে হাওয়া খেতে বেরিয়েছে তারা। বেশির ভাগই আবার ধনীর দুলাল। প্রকৃতির বাতাস সেবন না করলে নাকি ঘুম আসেনা। দিনে পুলিশের ভয় তাই রাত চক্করে ‘রোমিও’র দল। কম যায়না বেলদা থানাও। দেশ জুড়ে ভয়াবহ অতিমারীকে রোখার জন্য লকডাউন আরও দৃঢ় ভাবে বলবৎ করতে ‘কাবাব মে হাড্ডি’ হতে আপত্তি নেই পুলিশেরও। সজাগ রাত পাহারায় তাই পুলিশও নাকা চালালো বেলদার মোড়ে মোড়ে। রাতের তিনঘন্টার ব্যাট চালিয়ে ঝুলিতে উঠল ৯উইকেট আর একাধিক বাইক। বেলদার মত মেঘ ভরা আকাশে শনিবারের পীচে খুব খারাপ রান নয়।
শনিবার রাত থেকে বেলদা থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে পেট্রোলিং ও নাকা চালিয়েছে পুলিশ।লকডাউনের মাঝে আইন লঙ্ঘন করে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে থাকা ৯ জন বাইরের লোককে আটক করে পুলিশ ।এছাড়া ৮ জন বাইক আরোহীকেও আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সারা দেশজুড়ে চলছে লকডাউন প্রক্রিয়া।এর মাঝে নিয়ম ভেঙ্গে রাস্তায় বেরোতে দেখা যাচ্ছে একাধিক জনকে ।তবে নিয়ম মেনে ও অনেকে তাদের দৈনন্দিন বাজারে বেরিয়েছেন ।অনিয়ন্ত্রিত লোকেদের পুলিশ এর আগে লাঠি দিয়ে এবং পরে হাততালি অনুরোধ প্রভৃতির মাধ্যমে গান্ধীগিরির পন্থা অবলম্বন করে শায়েস্তা করেছে ।পুলিশের রূঢ় আচরণের পরে মানুষ অসন্তোষ করেছিল ,অনেকে পুলিশের অতি সক্রিয়তা বলে প্রশ্ন তুলে ধরেন।এরপর পুলিশ গান্ধীগিরির পন্থা নেয়। কিন্তু কোনও কিছুতেই নিজদের নিয়ন্ত্রন করেনি জনতা । বাধ্য হয়েই তাই সোজাসুজি আইনি পদক্ষেপের পথে পুলিশ।যদিও এখনও অবধি বেলদা থানা এলাকায় এখনো কোনো করোনা সংক্রমণ রোগী ধরা পড়েনি ।তবে যেসকল বহিরাগত লোকেদের দ্বারা যাতে সংক্রমণের না ছড়ায় তা নিশ্চিত করতে মরিয়া পুলিশ ।তাছাড়া তারা যদি অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি করেন তাদের থেকে এলাকাতে সংক্রমণ ঘটতে পারে ।তাই পুলিশের এই পদক্ষেপ বলে সূত্রের খবর ।বিশ্বে যেভাবে এই করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা সেখানে লকডাউন মেনে চললে এই সংক্রমণ থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যাবে বলে সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং সরকারী স্তরে প্রচার চালানো হচ্ছে।
তবে যে মানুষ প্রথমে পুলিশের অতিসক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরাও হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন যে এবার অনিয়ন্ত্রিত লোকেদের ঘোরাফেরা আটকাতে না পারলে সর্বনাশ তাদেরও। দুয়ারের গোড়ায় এসে বসে আছে মৃত্যুর রূপে করোনা। পুলিশের এই কড়া পদক্ষেপে এখন স্বস্তিতে তাঁরা। অন্যদিকে মানু্ষের মনের কথা বুঝতে পেরে খুশি পুলিশও। আরও নতুন উদ্যমে এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেলদা পুলিশের কর্তারা। পুলিশ জানিয়েছে উঁচু তলার অবাধ ছাড়পত্র রয়েছে, রয়েছে কড়া নির্দেশও। এবার ধরা পড়লে লকআপেই থাকতে হবে আইন ভঙ্গকারীদের। কোনও ভাবেই বাইরে বেরুনোর পথ পাবেনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ।
রাতের ‘বেতাজ বাদশা’ দের সবক শেখাতে রাস্তায় বেলদা পুলিশ, আটক ১৭
RELATED ARTICLES