Homeএখন খবরছত্রধর মাহাতর খোঁজে জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে জাতীয় তদন্ত কারি সংস্থা এনআইএ

ছত্রধর মাহাতর খোঁজে জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে জাতীয় তদন্ত কারি সংস্থা এনআইএ

নরেশ জানা: চমকে দেওয়ার মতই খবর, মাওবাদীদের সম্মুখ বাহিনী পুলিশি বিরোধি জন সাধারন কমিটির প্রাক্তন মুখপত্র ছত্রধর মাহাতর খোঁজে জঙ্গলমহলে ঘাঁটি গেড়ে বসল জাতীয় তদন্ত কারি সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এন আই এ। একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘন জঙ্গল বেষ্টিত একটি এলাকায় ভারতের অসামরিক ক্ষেত্রের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থার চার সদস্যের একটি দল ইতিমধ্যেই পৌঁছে গেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

যদিও কোনও প্রকাশ্য সূত্র এখনও অবধি এই খবরের সত্যতাকে স্বীকার করা হয়নি। যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ আধিকারিক “দ্য খড়গপুর পোষ্ট কে জানিয়েছেন, ২০০৯-১০ সালে মাওবাদীদের দ্বারা সংগঠিত ২টি বিধ্বংসী কর্ম কাণ্ডের তদন্তের জন্য ওই সংস্থাটির আসার কথা হচ্ছিল। মামলা দুটির তদন্ত করতে চেয়ে ওই জাতীয় তদন্ত কারি সংস্থার পক্ষ থেকে এন.আই.এ-র বিশেষ আদালতে আবেদন করা হয়। গত এপ্রিল মাসে বিশেষ আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে দিয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের আশার কথাই ছিল কিন্তু তাঁরা যে জঙ্গল মহলে প্রবেশ করেছে তেমনটা জানা নেই, তবে অসম্ভব কিছুই নয়।”

জানা যাচ্ছে, মাওবাদীদের কব্জায় চলে যাওয়া লালগড় থানা এলাকার ধরপুরম থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় প্রবীর মাহাত। ঘটনাটি ২০০৯ সালের জুন মাসে। প্রবীরকে অপহরণ করে মেলে ফেলা হয়। অন্য মামলাটি ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে যখন ঝাড়গ্রাম শহর থেকে সামান্য কিছুটা আগে বাঁশতলা স্টেশনে ভুবনেশ্বর-রাজধানী এক্স প্রেসকে মাওবাদীরা আটকে রেখে দিয়েছিল কয়েক ঘন্টা।

প্রথম ঘটনা টির সময় ছত্রধর ধরমপুর এলাকায় সক্রিয় থাকলেও দ্বিতীয় ঘটনার আগেই সেপ্টেম্বর মাসে গ্রেপ্তার হয়ে ছত্রধর জেলে ছিলেন এবং রাজধানী এক্সপ্রেস আটকে রেখে মাওবাদীরা ছত্রধরের মুক্তি দাবি করেছিল যদিও মূখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ঘটনার ১১বছর পরে এন আই এ সেই বিষয় নিয়ে তদন্ত করতে শুরু করল। এবং এমন সময় করল যখন বর্তমান রাজ্য সরকারের বদান্যতায় ছত্রধরের যাবজ্জীবন সাজার সময় মুকুব করা হয়েছে এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ছত্রধর মুক্তি পেয়েছেন।

আর আরও বড় কথা হল এন আই এ প্রবেশের মাত্র ১৫দিন আগেই ছত্রধরকে দেখা গেছে তৃণমূলের সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকতে। সূত্রের খবর এই যে শুভেন্দু অধিকারি ও পার্থ চ্যাটার্জির তত্ত্বাবধায়নেও জঙ্গলবাসীর মন না ফেরার ছত্রধর মাহাত কেই ঝাড়গ্রামের দায়িত্বে এনে জঙ্গলমহল ফের ফেরৎ চাইছে তৃণমূল।
উল্লেখ্য ভারত সরকার মাওবাদীদের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদী বলে মনে করেন এবং এন আই এ হল এমনই ক্ষমতা প্রাপ্ত সংস্থা যারা এই অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস বাদের মোকাবিলায় রাজ্য গুলির কোনও অনুমতি ছাড়াই কাজ করতে পারে। এন আই এ এতটাই শক্তিশালী যে তারা সন্ত্রাস বাদের মোকাবিলার স্বার্থে গ্রেপ্তার ও করতে পারে।

স্বাভাবিক ভাবেই এই সংস্থাটি সন্ত্রাস বাদের মোকাবিলায় শুধু ওই দুটি মামলাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে এমনটা নাও হতে পারে। ধিরে ধিরে তাঁরা আরও কিছু বিষয় নিয়ে এগুতে পারে। আর এই সংস্থা শুধু মাত্র ছত্রধরেই থেমে থাকতে না ও পারে। সুতরাং বিধান সভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল একটু বেকায়দায় পড়ে যেতে পারে কারন জঙ্গলমহলে বিভিন্ন কমিটির মাথায় তৃণমূলের সেই নেতা রাই যারা সরাসরি জনসাধারণের কমিটি বা মাওবাদী নেতা কর্মী হিসেবেই একদা সক্রিয় ছিল। জানা গেছে একদা রক্তাক্ত জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গায় এনআইএর সদস্যরা ঘুরে বেড়াবে এবং শুরুটা সম্ভবত শালবনী থেকেই শুরু করবেন যেখানে ২০০৮ সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যর কনভয়ের ওপর হামলা হয়েছে শক্তিশালী মাইন বিষ্ফোরনের মধ্যে দিয়ে।

RELATED ARTICLES

Most Popular