ওয়েব ডেস্ক : ছোটো থেকেই নতুন কিছু আবিষ্কারের ঝোঁক। নিজের নিত্য নতুন আবিষ্কারে গোটা দেশে সাড়া ফেলেছে দিগন্তিকা। দিগন্তিকা বোস, ১৭ বছর বয়সী মেয়েটি পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ভিএম ইন্সটিটিউশন ইউনিট-২- এর দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। একবার নয় দু’বার নিজের আবিষ্কারে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছে সে। তবে শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতি পুরস্কারই নয়, তার ঝুলিতে আরও একাধিক পুরস্কার, সম্মান রয়েছে৷ এর আগে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ চশমা তৈরি করে ছোট্ট দিগন্তিকা প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন বৈজ্ঞানিক মহলে। করোনা আবহে এবার উন্নত প্রযুক্তির নতুন মাস্ক আবিষ্কার করে ফেলল এই খুদে বিজ্ঞানী। যতদিন যাচ্ছে ক্রমশ আবিষ্কারের ভান্ডার বাড়ছে মফস্বলের এই বঙ্গ তনয়ার। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে লকডাউনে যখন সবাই বাড়িতে বসে ছিলেন, সে সময় দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহারের নয়া পন্থা আবিষ্কার করে তাক লাগিয়েছে দিগন্তিকা।
দিগন্তিকার এই আবিষ্কারে উদ্বুদ্ধ হয়ে চলতি বছর জাতীয় পুরস্কারের স্বীকৃতি পেলেন এই বাঙালি তরুণী। দিগন্তিকার আবিষ্কারের সংখ্যা কিন্তু খুব একটা কম নয়, এই বয়সেই সে প্রায় এগারোটি আবিষ্কার করে ফেলেছে। এবার উন্নত প্রযুক্তির মাস্ক আবিষ্কার করে গোটা দেশে তাক লাগিয়েছে দিগন্তিকা৷ ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিল, সৃষ্টি ও জ্ঞানের মতো আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাঁর আবিষ্কারটি পর্যালোচনা করেছে। সম্প্রতি তার এই আবিষ্কারে জাতীয় পুরস্কার পেলেন পূর্ব বর্ধমানের দিগন্তিকা। তাঁর নতুন এই আবিষ্কার নিয়ে সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “১৫ অক্টোবর ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড. এপিজে আবদুল কালামের নামাঙ্কিত জাতীয় পুরস্কার ডাঃ এপিজে আবদুল কালাম ইগনাইটেড মাইন্ড চিলড্রেন ক্রিয়েটিভিটি এ্যণ্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। যা সংস্থার ওয়েবসাইটে ঘোষণা হয়েছে। এই ঘোষণায় আমি অত্যন্ত খুশি।”
জানা গিয়েছে, মাস্ক ছাড়াও ইতিমধ্যেই দিগন্তিকা এই মূহুর্তে করোনার উপর মোট ৫টি বিশেষ গবেষণা করছে। তবে মাস্ক আবিষ্কারের পর ‘ইয়ার প্রেসার রিডাকশন টুল ডিউ টু দ্যা ইউজ অব মাস্ক’ এই নয়া আবিষ্কার কিভাবে কাজ করবে এই প্রসঙ্গে দিগন্তিকা জানায়, “স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশকে দিনে দীর্ঘ সময় ধরে মাস্ক পরতে হয়, ফলস্বরূপ কানের উপর ক্রমাগত চাপ পরে। এভাবে টানা মাস্ক পরে থাকার ফলে কানে ব্যাথা অনুভব করেন। এই সমস্যার সমাধানে একটি ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের সাহায্যে কিংবা কোনও নমনীয় বোর্ড দিয়ে আমি একটি নকশা তৈরি করি। যখন আপনি মাস্ক ব্যবহার করবেন তখন মাথার পিছনে আটকে থাকবে। ফলে কানের উপর কোনও চাপ থাকবে না। তার কারণে দীর্ঘ সময় মাস্ক ব্যবহার করলেও কানে কোনওরকম ব্যথা বা সমস্যা হবে না। আপনার অস্বস্তি দূর হয়ে যাবে এই নয়া আবিষ্কারে।”
এদিকে মেয়ের এই নতুন আবিস্কারে খুব খুশি বাবা সুদীপ্ত বোস। এবিষয়ে সুদীপ্ত বোস বলেন, “ছোট থেকেই নানা ধরনের গবেষণা নিয়েই ব্যস্ত থাকতে ভালবাসে দিগন্তিকা। ওর পড়ার ঘরটাই হয়ে উঠেছে ছোটখাট গবেষণা কেন্দ্র। এর আগেও মেয়ে একাধিক পুরস্কারও পেয়েছে নতুন নতুন চিন্তাধারার জন্য। মেয়ের আবিষ্কারের স্বীকৃতিতে বাবা তো আনন্দ পাবেই।”