ওয়েব ডেস্ক : করোনা সংক্রমণ এড়াতে রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী এতদিন ৫০% কর্মী নিয়ে চলছিল সরকারী কাজকর্ম। ৮ জুন থেকে কর্মী সংখ্যা বাড়িয়ে ৭০% কর্মী নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে সরকারি অফিস। কিন্তু নয়া পদ্ধতিতে অফিস শুরুর দু’দিনের মধ্যে মঙ্গলবার নবান্নের তরফে ফের নতুন নির্দেশিকা জারি করা হল। এতদিন বলা হয়েছিল সব কর্মীকে সপ্তাহে তিন দিন বাধ্যতামূলকভাবে অফিসে আসতে হবে। কিন্তু এদিনেত নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হল, যদি কোনো কর্মীর সামান্য জ্বর কিংবা কাশি হয় তবে সেক্ষেত্রে ওই কর্মীকে সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত কাজে যোগ দিতে হবে না। সেই সাথে কনটেনমেন্ট জোনে যে সব কর্মীরা থাকেন তাদেরও আপাতত অফিসে না এসে পরিবর্তে তাদের বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে।
এদিন রাজ্য সরকারের তরফে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে তা হল-
★★ যে সব অফিসারের পদ ডেপুটি সেক্রেটারির উপরে এবং অফিসে আলাদা কেবিন কিংবা বসার ব্যবস্থা আছে তাদের নিয়মিত অফিসে আসতে হবে এবং সাধারণ ভাবে নির্দিষ্ট সময় থেকে কাজ করতে হবে।
★★ লিফটে একসঙ্গে তিনজনের বেশি ওঠানামা করা যাবে না।
★★ করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নেই এমন অফিসার, কর্মীরাই শুধুমাত্র এক দিন অন্তর অফিসে আসবে। তবে কোনও কর্মীর যদি সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি দেখা দেয় তবে তাঁকে অফিসে আসতে হবে না।
★★ অফিসে সব সময়ে মাস্ক পরে থাকা বাধ্যতামূলক। বারবার হাত ধুতে হবে এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। সকলকে অপরের নিরাপত্তার বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে এবং কেউ যদি মাস্ক না পরে তবে তা কঠোর ভাবে দেখা হবে।
★★ যে সব কর্মীরা কন্টেনমেন্ট জোন এর অন্তর্ভুক্ত এলাকায় থাকেন যতদিন না ওই এলাকাকে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ফেলা হচ্ছে ততদিন তারা বাড়ি থেকে কাজ করতে পারবেন।
★★ যে সব জায়গায় অফিসার, কর্মীরা একই জায়গায় বসে কাজ করেন সেখানে ১০ জনের বেশি একসঙ্গে বসতে পারবেন না। বসার ব্যবস্থা এমনভাবে করতে হবে যাতে দু’জন কর্মীর মধ্যে কমপক্ষে দু’মিটারের দূরত্ব থাকে। যদি একই সাথে ১০ জন কর্মী বসেন তবে ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না। সেক্ষেত্রে কর্মী সংখ্যা আরও কমিয়ে আগের নির্দেশ মতো ৭০ শতাংশের উপস্থিতি কমানো যেতে পারে। সপ্তাহ অনুযায়ী রোস্টার বানাতে হবে।
★★ রোস্টার ও অন্য কারণে যে সব অফিসার ও কর্মী অফিসে আসবেন না তাদের ই-অফিস ব্যবস্থার মাধ্যমে বাড়ি থেকেই কাজ করতে হবে। যে সব জায়গায় এই ব্যবস্থা নেই সেখান যত দ্রুত সম্ভব ই-অফিসের ব্যবস্থা করতে হবে।
★★ বাইরে থেকে যে সব লোকেরা কাজের জন্য ভিতরে আসবেন তাদের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসার জায়গাতেও দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
★★ কর্মীদের ব্যবহার করা সামগ্রী যেমন কিবোর্ড, মাউস, ফোন, এসি রিমোট ইত্যাদি নিজেদেরই যতটা সম্ভব জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
★★ এবার থেকে সামনাসামনি বসে কোনও মিটিং বা বৈঠক করা যাবে না। তার বদলে ফোন কিংবা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব আলোচনা সারতে হবে।
একদিকে রাজ্যে প্রত্যেকদিন আক্রান্তের নিরিখে নতুন রেকর্ড গড়ছে রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সরকারী অফিসে ৭০% কর্মী আসছিলেন। কিন্তু অফিস শুরুর দু’দিনের মধ্যেই ফের রাজ্য সরকারের নয়া নির্দেশিকায় স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সরকারের প্রতি পদক্ষেপে ব্যাপক পরিকল্পনার অভাব রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।