নিজস্ব সংবাদদাতা: এ বছর নেতাইয়ের ঘটনার ১০ বছর কিন্তু সেই অভিশপ্ত ৭ই জানুয়ারি সরকারি ভাবে নেতাই যাননি শুভেন্দু কারন রাজ্য তৃণমূলের পাঁজিতে তাঁর যাত্রা ছিলনা পরিবর্তে অন্য দোলা সেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেই স্মরণ সভার আয়োজনে। শুভেন্দু অবশ্য নিজের মত করে বেসরকারি ভাবে নেতাই গিয়েছিলেন। আর সেবার শুভেন্দু অধিকারীর অনুষ্ঠান হয়েছিল দলীয় পতাকা বিহীন।
জঙ্গলমহলের তৃনমূল নেতা কর্মী ও সমর্থকদের মন থেকে শুভেন্দু উৎপাটনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আন অফিসিয়ালি তা শুভেন্দু অধিকারী যেমন উপলবদ্ধি করেন তেমনই তা অনুভব করেন তাঁর অনুগামীরাও। তাই তাঁরা অপেক্ষা করে থাকেন কখন আবার তিনি নেতাই আসবেন। রবিবার সেই অপেক্ষার সমাপ্তি হতে চলেছে। ওই দিন বিকাল ৩টায় তাঁর লালগড়ের নেতাই গ্রামে পা রাখার কথা। শনিবার তাই রাত জাগছেন শুভেন্দু অনুগামীরা।
রবিবার প্রতিপদ। রাজ্যের পরিবেশ ও জলসেচ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে ও “নেতাই শহীদ স্মৃতিরক্ষা কমিটি” ব্যাবস্থাপনায় বেশ কয়েকটি কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। মূলতঃ জনকল্যাণ মূলক কিছু উদ্যোগ এবং বেশ কিছু উপভোক্তাকে এদিন গৃহদান ও মহিলাদের সেলাই মেশিন প্রদান করার পাশাপাশি দুঃস্থ মানুষদের বস্ত্র দান কর্মসূচি রয়েছে। যদিও এবারও শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রী বা তৃনমূল নেতা নয় যাচ্ছেন নেতাই গ্রামের ‘সেবক’ হিসাবে। এর আগে জুন মাসে হুল দিবসে নেতাইয়ের থেকে ৮ কিলোমিটার দুরে কাঁটা পাহাড়ি গিয়েছিলেন শুভেন্দু । সেখানেও তাঁর উপস্থিতি ছিল বেসরকারি ভাবেই।
মাঝখানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছে অনেক। লালগড় তথা বিনপুর ১ ব্লক তৃনমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে শুভেন্দু অনুগামী তন্ময় রায়কে সরিয়ে দিয়ে তাঁকে মূল সংগঠনের জেলা কমিটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে কারনে ক্ষুব্ধ তন্ময় পদ থেকে সরে যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করে দলের নেতৃত্বকে চিঠিও দিয়েছেন। কার্যত সেই তন্ময় রায়ের নেতৃত্বেই চলছে রবিবার শুভেন্দু বরনের আয়োজন। নেতাই গ্রামের মুখেই তাঁর উদ্দেশ্যে বিশাল অরাজনৈতিক স্বাগত তোরণ নির্মিত হয়েছে।
অন্যদিকে নেতাই গ্রামে রবিবারের অনুষ্ঠান মঞ্চটি এবং শহীদ বেদি সারা রাত জেগে সাজানোর কাজ করে চলেছেন জনা পঞ্চাশেক তরুণ। যত রাতই হোক ভোরের আলো ফোটার আগেই কাজ শেষ করতে চান তাঁরা। সমগ্র অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারাই প্রায় তৃণমূলের নেতা কর্মী সমর্থক কিন্তু কোথাও তৃণমূলের নামগন্ধ নেই। কারন এঁরা যতটা না তৃনমূল তারও চেয়ে বেশি শুভেন্দু অনুগামী। আর সে কারণেই শুভেন্দু যেহেতু নিজে বলেছেন, মন্ত্রী বা রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি যাচ্ছেননা তাই পুরো অনুষ্ঠান টিকেই অরাজনৈতিক করে গড়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর তাঁর অনুগামীরা। নেতাইয়ের বহু মানুষ এমনকি তৃনমূল কর্মীরাও মনে করেন, ৯ জনের মৃত্যুর বিনিময়ে যে নেতাই রাজ্য তথা দেশের নজরে উঠে এসেছে সেই নেতাইকে পর্যাপ্ত সুবিধা দেয়নি রাজ্য সরকার। বহু প্রতিশ্রুতি এখনও অধরা কিন্তু তাঁরা এটাও বলে থাকেন যে সরকার যাই করুকনা কেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী নেতাইকে বঞ্চিত করেননি। তাই শুভেন্দুকে ঘিরেই তাঁদের প্রত্যাশা পূরণের স্বপ্ন এখনও অটুট রয়েছে। আর সে কারনেই রাত জাগছে নেতাই।