নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা ভাইরাস যার পরিবর্তিত নাম ‘কোভিড-১৯’ প্রতিরোধকারি এন-৯৫ মাস্ক ভারতের বাজারে সহজলভ্য হয়েছে বলে জানালো কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক । ১৩ই ফেব্রুয়ারি এমনই জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশে তৈরি একটি উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রীগোষ্ঠীর দ্বিতীয় বৈঠকে। উল্লেখ্য এই মন্ত্রীগোষ্ঠীর তৈরি করা হয়েছে নোভেল করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় পদ্ধতি ও প্রস্তুতি পর্যালোচনা করার জন্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই মারণ ভাইরাসের বর্তমান নাম দিয়েছে ‘কোভিড-১৯’। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধনের পৌরোহিত্যে ৩ ফেব্রুয়ারি নির্মাণ ভবনে মন্ত্রীগোষ্ঠীর প্রথম বৈঠক বসে। দ্বিতীয় বৈঠক আজ অনুষ্ঠিত হল নতুন দিল্লিতে। ডঃ হর্ষ বর্ধনের পৌরোহিত্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরী, বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রী নিত্যানন্দ রাই, স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত জাহাজ চলাচল, রসায়ন ও সার দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী মনসুখ মাণ্ডব্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে। সেখানেই মন্ত্রীগোষ্ঠীকে এও জানানো হয় যে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সংক্রান্ত উপকরণ এবং এন-৯৫ মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে এই বিশেষ মাস্ক অবশ্য খোলা বা একটা দুটো পাওয়া যাবেনা। ২০টি মাস্কের একটি প্যাকেট মিলবে ১২০০ টাকা মূল্যে। মোটামুটি এক নাগাড়ে ৮ ঘণ্টা ব্যবহার করা যেতে পারে একটি মাস্ক। অন লাইনে অর্ডার করলে ৪টি কর্ম দিবসের মধ্যেই এই মাস্ক পাওয়া যেতে পারে ভারতের যে কোনো প্রান্তেই, বাড়িতে বসেই।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এই বৈঠকে ‘কোভিড-১৯’-এর সাম্প্রতিক পরিস্থিতির বিষয়ে মন্ত্রীগোষ্ঠীকে জানানো কেরলে যে তিনজনের শরীরে এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে সে সম্পর্কেও জানানো হয় তাঁদের। ভারতে ‘কোভিড-১৯’ ব্যাধির ব্যবস্থাপনায় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপগুলি সম্পর্কে জানানো হয় তাঁদের। ভ্রমণ সংক্রান্ত সরকারি উপদেশগুলিও তাঁদের জানানো হয় যেমন, চিন থেকে আগত কোন যাত্রীকেই ভিসা দেওয়া আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
মন্ত্রীগোষ্ঠীকে জানানো হয় যে উহান থেকে আনা ৬৪৫ জন ভারতীয়কে দুটি কোয়ারান্টাইন কেন্দ্র বা পৃথকভাবে রাখা হয়েছে। এগুলি সশস্ত্র বাহিনী এবং আইটিবিপি দেখাশোনা করছে। প্রতিদিন ওই বাসিন্দাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। মন্ত্রীগোষ্ঠীকে জানানো হয় যে কারোর শরীরেই ‘কোভিড-১৯’-এর লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এছাড়া, মন্ত্রীগোষ্ঠীকে জানানো হয় যে আজ পর্যন্ত ২,৩১৫টি উড়ান এবং তার ২ লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৪৭ জন যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। ২১টি বিমানবন্দর, আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর এবং সীমান্ত অঞ্চল বিশেষ করে, নেপাল সীমান্তে যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। চিন, হংকং, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডের পাশাপাশি জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সব উড়ানের যাত্রীকেই স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। এছাড়া, বর্তমানে ৩৪টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১৫,৯৯১ জনকে সামাজিক নজরদারির অধীনে রাখা হয়েছে। ১,৬৭১টি নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে তিনটি ক্ষেত্রে এই জীবাণু পাওয়া গেছে। আইসিএমআর-এর পুণেস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভিরোলজি নোডাল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। ১৪টি আঞ্চলিক পরীক্ষাগারকেও সচল রাখা হয়েছে এবং তারাও নমুনা পরীক্ষা করছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পরিস্থিতির ওপর প্রতিনিয়ত নজর রাখা হচ্ছে সবক’টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ সচিব ছাড়াও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ক্যাবিনেট সচিব প্রতিদিন উচ্চপর্যায়ের প্রস্তুতি ও ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছেন। একটি ২৪ ঘন্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে যার নম্বর হল – (০১১) ২৩৯৭-৮০৪৬। সচেতনতামূলক প্রচারপত্র তৈরি করা হয়েছে এবং তা বিভিন্ন সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিন মাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে প্রতিদিন সাংবাদিক সম্মেলন করা হচ্ছে।