নিজস্ব সংবাদদাতা: তিনিই ভারতের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি সমালোচনাকে এতটাই ভয় পান যে তাঁর দপ্তর সদাই ব্যস্ত থাকে তাঁর নামে কোথায় কখন কে সোশ্যাল মিডিয়ায় কী পোস্ট করছে তা নজরদারি করতে এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠিয়ে সেই সমালোচনা মুছে ফেলতে। দেশজুড়ে করোনা মহামারি আর অক্সিজেন সঙ্কটের চাইতেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বোধহয় আরও বড় সঙ্কট বিরুদ্ধ সমালোচনা।
আর সেই বিরুদ্ধ সমালোচনা আটকাতে অতি সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি করার জন্য একটি অর্ডিন্যান্স জারি হয়েছে যা আইনে পরিণত করার তোড়জোড়ও চলছে। তৈরি হয়েছে একটি মনিটরিং কমিটি। যে কমিটি বিরুদ্ধ সমালোচনার জবাব দেওয়ার চাইতে বেশি তৎপর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ওই লেখা মুছে দিতে। সেভাবেই সম্প্রতি ট্যুইটার কর্তৃপক্ষকে মুছে দিতে বাধ্য করা হল রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী মলয় ঘটকের একটি ট্যুইট।
গত ২০ এপ্রিল রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী মলয় ঘটক দুটি ছবি দিয়ে একটি ট্যুইট বার্তায় লিখেছিলেন, “কোভিড নিয়ন্ত্রণে অব্যবস্থার জন্য ভারত কোনওদিন নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমা করবে না। একদিকে যখন দেশ কোভিড সংকটে ভুগছে তখন লক্ষ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন অন্য দেশে রফতানি করেছে মোদী সরকার। নির্বাচনী সভা করতে ব্যস্ত ছিলেন নেরো”। দেখা যাচ্ছে মলয় ঘটকের সেই ট্যুইট মুছে দিয়েছে ট্যুইটার কর্তৃপক্ষ।
যদিও এই নতুন নয় এর আগে কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা, অন্ধ্রের সাংসদ রেবন্ত রেড্ডি, দু’জন চিত্র পরিচালকের টুইটও মুছে দেওয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে টুইটার জানিয়েছে, সরকারের থেকে আইনি অনুরোধ পেয়েই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে শুধু রাজনৈতিক দল নয় মোদির ব্যর্থতা ভর্ৎসিত হয়েছে খোদ আদালতে। করোনার ভয়াবহ আক্রমনের মুখে সমস্ত রাজনৈতিক দল যখন পশ্চিমবঙ্গে সভা করার পরিকল্পনা ত্যাগ করেছে তখনও টনক নড়েনি প্রধানমন্ত্রীর। বহাল তবিয়তেই বহাল রেখেছিলেন নিজের কর্মসূচি। এরপর একাধারে সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্টের জোড়া আক্রমনের মুখে পড়ে মোদি সরকার ও নির্বাচন কমিশন। তারপরই নির্বাচনী সভা থেকে সরে আসেন মোদি।
শোনা যাচ্ছে করোনা পরিস্থিতিতে দেশ জুড়ে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে যখন ঝড় উঠেছে তখুনি করোনা (covid-19) সংক্রান্ত ‘উস্কানিমূলক’ পোস্ট এবং অ্যাকাউন্ট সরানোর বিষয়ে এবার কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। স্যোশাল মিডিয়ায় করোনা সংক্রান্ত পোষ্টে সৎকারের ছবি দেখিয়ে হিংসাত্মক এবং উস্কানিমূলক বার্তা দিচ্ছে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট- এমনটা অভিযোগের জেরে এবার কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্র সরকার।
ইতিমধ্যেই ফেসবুক, ট্যুইটার এবং ইনস্টাগ্রাম থেকে ১০০-এরও বেশি পোষ্ট এবং অ্যাকাউন্ট স্যোশাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র সরকারের তরফে। সূত্রের খবর, সেই তালিকায় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির প্রচারমূলক পেজ ‘বাংলার গর্ব মমতা’ও রয়েছে। যদিও অন্ধ হলে যে প্রলয় বন্ধ থাকেনা তা এখন সমালোচনার ভয়ে ভীত মোদিকে বোঝানোর মত কেউ নেই।