নিজস্ব সংবাদদাতা: গত বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (MMCH)য়ের প্যাথলোজি ল্যাব। ফলে শিকেয় উঠেছে রক্ত-মল-মূত্র-কফ ইত্যাদির পরীক্ষা। দাঁও মারছে বেসরকারি ল্যাব গুলি। লকডাউন আর করোনা কালীন সময়ে মানুষের রুটি রুজি তলানিতে ঠেকেছে তারই মধ্যে রোগ বিসুখ লেগে রয়েছে। সেই রোগ নির্ণয়ের জন্য সামান্য পরীক্ষা করতে ছুটতে হচ্ছে বেসরকারি ল্যাবে। কাছা খুলে পকেট কেটে নিচ্ছে তারা। এই অসহনীয় অবস্থায় টানা পাঁচ দিন কাটানোর পর ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রোগি ও তাঁর আত্মীয় স্বজনের দল। বিক্ষোভ সামাল দিতে ছুটে আসতে হল পুলিশকে।
বিক্ষোভকারীদের অনেকের অভিযোগ গত বুধবার শেষ পরীক্ষা হয়েছিল MMCH ল্যাবে। তারপর থেকে যাঁদের পরীক্ষা হবার কথা তাঁদের পরীক্ষা হচ্ছেনা আর পরীক্ষা হচ্ছেনা বলে চিকিৎসাও হচ্ছেনা। ফলে গত কয়েকদিন ধরেই বিনা চিকিৎসায় থাকতে হচ্ছে রুগিদের। প্রতিদিনই বলা হচ্ছে যে কাল থেকেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে কিন্তু বাস্তবে কিছুই হচ্ছেনা। যাঁদের সামর্থ্য রয়েছে তাঁরা বেসরকারি ল্যাব থেকে পরীক্ষা করিয়ে নিচ্ছে কিন্তু যাঁদের সামর্থ্য নেই তাঁরা পড়ে রয়েছেন । ওদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, পরীক্ষার রিপোর্ট ছাড়া সঠিক ওষুধ প্রয়োগ করতে পারবেননা।
MMCH সূত্রে জানা গেছে হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৬ জন কর্মী আছেন। সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে ৩জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপরই জীবানুমুক্ত করার জন্য গত বৃহষ্পতিবার থেকে ল্যাবরেটরি সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পাঁচদিন হয়ে গেলেও জীবানুমুক্ত করে ল্যাবরেটরি না খোলায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর পরিজনেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়। শেষমেশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার থেকে ল্যাবরেটরি খোলার সিদ্ধান্ত জানালে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তার আগে এদিনই পুরো ল্যাবরেটরি জীবানুমুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য MMCH ল্যাবে অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা বিভাগের হাজার খানেক রোগি ছাড়াও বহির্বিভাগের রোগিদেরও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা হয়ে থাকে। ফলে কর্মীদের ওপর চাপও থাকে। ৩জন কর্মীর আক্রান্ত হওয়ায় সমস্যা যেমন ছিল তেমনি ল্যাব সংক্রমন মুক্ত করা জরুরি হয়ে পড়ে কিন্তু বিভিন্ন কারনে কয়েকদিন সেই কাজ করা হয়ে ওঠেনি। সেই কাজ শেষ অবধি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানালেন MMCH কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।