অশ্লেষা চৌধুরী: শুভেন্দুর পর উত্তরবঙ্গ দখল রাজীবের। রাজ্যের মিনি সেক্রেটারিয়েট উত্তরকন্যার দেওয়ালে আজ দেখা গেল রাজীব বন্দোপাধ্যায়ের সমর্থনে পোষ্টার। তাতে লেখা রয়েছে ‘আমরা দাদার ভক্ত’। তবে কে বা কারা সেই পোস্টার ঝুলিয়েছেন, তাঁর হদিস মেলেনি। উত্তরকন্যায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকা সত্বেও কে বা কারা এভাবে উত্তরকন্যার সীমানা প্রাচীরে পোস্টারগুলি লাগালো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
কয়েক দিন আগেই তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর পোস্টারে ছেয়ে যায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। দক্ষিণের সীমা ছাড়িয়ে উত্তরের দুই দিনাজপুর, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়িতে একের পর এক পোস্টার পড়তে থাকে শুভেন্দু অধিকারীর নামে। কখনও সেই পোস্টারে লেখা ‘শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন, আছেন, থাকবেন আমাদের হৃদয়ে, সমর্থনে দাদার অনুগামীরা। তো কখনও দীপাবলির শুভেচ্ছা জানানো হয় পোস্টার। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। আর সেই তালিকায় আজ যোগ হল রাজীবের নাম।
উল্লেখ্য,গত শনিবার টালিগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের দলের বিরুদ্ধেই এক রাশ ক্ষোভ উগরে দেন। কটাক্ষের সুরে তিনি এদিন বলেন, ‘যারা মাঠে ঘাটে কাজ করে তারা প্রাধান্য পায় না । ক্ষমতা লোভীরা দলে জায়গা পাচ্ছে । দলে যারা স্তাবকতা করে তাদের নম্বর বেশি। আমি পারি না বলে আমার নম্বর কম। আর তারপরেই রাজ্য তথা কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে রাজীবের নামে পোস্টার পড়তে শুরু করে।
মঙ্গলবারও পোস্টার পড়ে বনমন্ত্রীর নিজের জেলা হাওড়ায়। টি রোড সংলগ্ন বালি খাল, বালি নিমতলা-সহ একাধিক জায়গায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ পোস্টার দেখা যায়। কোথাও লেখা ‘শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, রাজীবদা ভরসা।’ কোথাও আবার লেখা ‘দিকে দিকে লাখে লাখে, চাইছে মানুষ রাজীবদাকে।’ ‘আমরা দাদার সমর্থক’ ও ‘দাদার ভক্তদের’ নামে দেওয়া হয়েছে পোস্টারগুলি। অন্যদিকে একই রকম ছবি-সহ পোস্টার-ফেস্টুন পড়েছে বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা ও স্টেট ব্যাঙ্ক মোড়ে।
সবথেকে বড় কথা হল গতকাল বুধবার, গোপালনগরে মমতার সভার দিন সকালে ঠাকুরনগর, গাইঘাটায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে পোস্টার দেখা গিয়েছে। এখানকার স্টেশন চত্বর, রাস্তায় পোস্টারে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে “কাজের মানুষ, কাছের মানুষ”, “ছাত্র-যুবর নয়নের মণি” বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বন্যপ্রাণী লাভার্স সংগঠনের তরফে এই প্রচার বলে পোস্টার, ফ্লেক্সে উল্লেখ ছিল।আর আজ দক্ষিণের সীমা ছাড়িয়ে শুভেন্দুর মত রাজীবও উত্তরবঙ্গের দখল নিয়ে নিল। রাজ্য রাজনীতিতে এই ঘটনা যথেষ্ট আলোড়ন তুলেছে, তা বলা বাহুল্য।