নিজস্ব সংবাদদাতা: মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার বা চলতি কথায় সেন্ট্রাল জেল থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ মাত্র আড়াই কিলোমিটার রাস্তা কিন্তু ১০ মিনিটের সেই রাস্তা পেরিয়ে আসার সুযোগ দিলেন না ৫৫ বছর বয়সী জেলার বিভু মল্লিক। পথিমধ্যেই আ্যম্বুলেন্সেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন জেলার-২। রবিবার ছুটির দিন দুপুরে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই এই মৃত্যু হতবাক করে দিয়েছে জেলরক্ষী ও জেলকর্মীদের। অবাক বন্দিরাও।
সংশোধনাগার সূত্রে জানা গেছে হাই সুগার ও নানা উপসর্গ দেখা দিয়েছিল তাঁর। কয়েকদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতা চলছিল। জেলের হাসপাতালেই চিকিৎসকরা দেখছিলেন তাঁকে। রবিবার দুপুরে হঠাৎই বুকে চাপ অনুভব করায় জেলের চিকিৎসক ঝুঁকি নিতে চাননি। দ্রুত তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর কথা বলেন। জেলেরই আ্যম্বুলেন্স করে তাঁকে নিয়ে রওনা হন সহকর্মীরা। কিন্তু শেষরক্ষা হলনা, হাসপাতালে ঢোকার মুখেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ঘটনার কথা স্বীকার করে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার সুদীপ বসু জানিয়েছেন, ‘কিছুদিন ধরেই অসুস্থ হয়ে ভুগছিলেন, “আমাদের জেলার টু বিভু মল্লিক। আজ দুপুরে তাঁর বুকে ব্যাথা হলে তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে।” সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভু মল্লিকের বাড়ি কলকাতার বেহালা এলাকায়। তিনি এর আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নিজের দায়িত্ব কৃতিত্বের সঙ্গে পালন করার অবসর নেন।
এরপর সংশধনাগার দপ্তরে কাজে যোগদেন। গত তিন বছর ধরে তিনি মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে কর্তব্যরত ছিলেন। বেশকিছুদিন ধরেই সুগার, উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল ইত্যাদি সমস্যায় ভুগছিলেন। স্বাভাবিক কারণেই ম্যাসিভ হার্ট আ্যটাক হয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে বুকে ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা রয়েছে জেনেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিছুদিন ধরেই জেলে করোনার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই করোনা আক্রান্ত হওয়ার ফলেই তাঁর পুরানো রোগ গুলির বাড়বাড়ন্ত হল কিনা তা দেখতে চায় কর্তৃপক্ষ। এই পরীক্ষার পরেই স্থির হবে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে নাকি প্রশাসনের উদ্যোগে সৎকার কার্য সম্পাদন হবে।