নিজস্ব সংবাদদাতা: নামেই শহর কিন্তু আদতে যে অজ গাঁয়ের চেয়েও খারাপ অবস্থা তা এক রাতের বৃষ্টিই টের পাইয়ে দিল মেদিনীপুর শহরের হবিবপুর এলাকার ২০টি পরিবারকে। বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে ঘরের ভেতরের গোড়ালি ভরা জলে বাসন কোসন তো সাঁতার কাটলই তার সাথে কেউ কেউ ঘরের ভেতরে দেখলেন সাপ আর ব্যাঙের সহজ সহাবস্থানের মত বিরল দৃশ্যও।
মেদিনীপুর পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ঘেঁষে থাকা ধর্মা লাগোয়া হবিবপুরের এই অংশের বাসিন্দাদের তাই রাত কেটেছে হয় খাটের ওপর কিংবা চেয়ার আর চৌকির ওপর পা তুলে। জাতীয় সড়ক ঘেঁষে তৈরি হচ্ছে বড় বড় ইমারত। আইনকে বুড়ো আঙুল অথবা হোমড়া চোমড়াদের ম্যানেজ করে কোথাও কোথাও নয়ানজুলি খেয়ে নিয়েছে ওইসব ইমারত আর দোকান। কোথাও নির্মান কার্যের জন্য অথবা ব্যবসার জন্য দিনের পর দিন যুগের পর যুগ পড়ে রয়েছে নিকাশি নালা বন্ধ করে।দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় সড়কের পাশে থাকা জল নিকাশি গুলি সংস্কার বন্ধ রয়েছে।বর্তমানে মেদিনীপুর পৌরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় কাউন্সিলররাও হাত তুলে নিয়েছেন। ফলে পোয়া বারো বাড়তি জলের। সে যেখানে নরম আর গড়ানো জমি পায় সেদিকেই গড়ায়, তাই গড়িয়েছে।
ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা সমিরন কাপড়ীদের বক্তব্য, ” দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই ওই সমস্ত নিকাশি গুলি কোনরূপ সংস্কারে নজর দেয়নি পৌর প্রশাসন। যার জেরে একেবারে জল নিকাশি বন্ধ রয়েছে।সে কারণে বুধবার রাত থেকে সামান্য জল হতেই রাস্তাসহ পাশাপাশি বাড়িগুলি জল ঢুকে বন্যার আকার নিয়েছে। নিজেদের পরিবার বাঁচাতে নিজেরাই উদ্ধারের চেষ্টা করছেন সকলে।”
এই বিপর্যয়ের পর কাউকে খবর দেননি, আসেনি কোনও রাজনৈতিক নেতা? প্রশ্ন করতে শকুন্তলা দাসরা জানান, এখন তো ভোটের সময় নয়, তাই আসেনি।
গুলমোহন দাস নামে এক বাসিন্দা জানালেন, গোটা শহরের জল নেমে আসে এখান দিয়েই। আগে সে জল বেরিয়ে যেত নয়ানজুলিতে। এখন নয়ানজুলিই নেই তো যাবে কোথায়? আমাদের ঘরেই ঢুকছে। আমরাই এখন নয়ানজুলির বাসিন্দা। তাই সাপ ব্যাঙ সবই ঢুকেছে। তারই মধ্যে কাচ্চাবাচ্চা নিয়ে রাত কাটিয়েছি। বিষয়টি জনপ্রতিনিধিরা অনেক হলেও বেলা এগারোটা পর্যন্ত কেউই হাজির হয়নি ওই এলাকায়। অগত্যা নিজেরাই নিজেদের মত করে উদ্ধার হওয়ার চেষ্টা করেছেন বাসিন্দারা।