নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনায় একের পর এক মৃত্যু যেন আর যেন নাড়া দেয়না তেমন করে। তবুও মাঝে মধ্যে একেকটা মৃত্যু দারুন অব্যক্ত যন্ত্রনায় কুঁকড়ে দেয়। হতে পারে প্রিয়জন কিংবা কোনও ভালোবাসার মানুষের চলে যাওয়া ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় মন। ঠিক যেমনটাই দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে গেছে উত্তর প্রদেশের মীরাটের রাফেল পরিবারের। মীরাটের ক্যান্ট’নমেন্ট এলাকার বাসিন্দা গ্রগারি রেমন্ড রাফেল। যাঁর স্ত্রী ১৯৯৭ সালের ২৩ এপ্রিল হাসপাতালের অপারেশন টেবিলে জন্ম দিয়েছিলেন দুটি ফুটফুটে শিশুর। মাত্র তিন মিনিটের ব্যবধানে।
রাফেল দম্পত্তি যমজ দুই সন্তানের নাম রেখেছিলেন জো’ফ্রেড ভার্গিস গ্রগারি এবং রা’ফ্রেড জর্জ গ্রগারি। এই বছরই এপ্রিল মাসে নিজেদের ২৪তম জন্মদিনের পরের দিনেই কোভিড পজিটিভ হয়েছিলেন৷ আর দুজনেই করোনা জয় করে ফিরেও এসেছিলেন! কিন্তু তাঁরা দু‘জনেই এক ঘণ্টার এদিক ওদিকে মারা গেলেন এক সপ্তাহ আগে৷ উত্তরপ্রদেশের মীরাটে হাসপাতালে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে৷
এই দুই যমজ ভাইয়ের পুরোটাই মিল৷ তাঁদের দুজনের ৬ ফুট উচ্চতা৷ তাঁরা একসঙ্গে কলেজে যেতেন৷ তাঁরা কোয়েম্বাটুরে বি টেক শেষ করেন৷ জোফ্রেড এবং রালফ্রেড দুটো আলাদা কোম্পানিতে কাজ করতেন। আর ইচ্ছা ছিল তাঁরা একসঙ্গে বিদেশ যাবেন। কিন্ত না, যাওয়া হলনা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানাচ্ছে, জোফ্রেড মীরটে বাস করতেন৷ তিনি বাড়ি থেকে কাজ করতেন৷ রালফ্রেড নিজের হায়দরাবাদের অফিস থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন৷ কারণ তাঁর হাতে একটা চোট লেগেছিল৷ এরপরই তাঁদের জন্মদিন পালন হয় পরিবারে আর তার পরেই তাঁদের জ্বর হয়৷ কয়েকদিন তাঁদের বাড়ি রেখেই চিকিৎসা চলছিল৷ অক্সিমিটার কেনা হয়েছিল, ওষুধ খাওয়া চলছিল৷ তাঁদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছিল৷ তাঁদের মে মাসের ১ তারিখে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ ১০ মে তাঁরা দুজনেই নেগেটিভ হন৷ তাঁরা অত্যন্ত খুশি হয়ে যান৷ কিন্তু ৩ দিন বাদে হঠাৎই প্রথমে জোফ্রেড মারা যান, এরপরেই পরিবারের মনে হয়েছিল যে রালফ্রেডও বাঁচতে পারবে না৷ কারণ ওঁদের কখনও আলাদা করা যেত না৷
রালফ্রেড একই হাসপাতালে ছিলেন৷ তিনি হাসপাতাল থেকে নিজের মা-কে ফোন করেন৷ জানতে চান কেমন আছেন তাঁর যমজ ভাই৷ কারণ জোফ্রেডকে দিল্লির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ তাঁকে কথাটা জানানো হয় তিনি বলেন, ‘‘মা তুমি মিথ্যা কথা বলছ’’তিনি পরের দিনেই মারা যান , জানিয়েছে অন্য একটি সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া৷ ঘটনায় শোকে পাথর হয়ে গেছেন বাবা-মা।