নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা নিয়ে গোটা জাতি যখন আশঙ্কিত, মুক্তির উপায় খুঁজছে তখুনি ভয়াবহ হামলা মাওবাদীদের। জনতা কারফিউ চালু হওয়ার কয়েকঘণ্টা আগেই মাওবাদী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে শনিবার দুপুর থেকে চলল রবিবার ভোর পর্যন্ত চলা গুলির লড়াইয়ে ১৭জন নিরাপত্তারক্ষী নিহত হয়েছেন এবং ১২জন গুরুতর জখম। মাওবাদীরা লুট করে নিয়ে গেছে বেশ কিছু লাইট মেশিনগান আর ১২টি একে ৪৭। সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে গত তিনবছরে ছত্তিশগড়ে সব চেয়ে ভয়াবহ মাওবাদী আক্রমন।
জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত সুকমা জেলার জঙ্গল ও পার্বত্য এলাকা এলামগুন্ডার কাসালপাডের চিন্টাগুফার কাছে। জখম নিরাপত্তা রক্ষীদের এয়ারলিফটের মাধ্যমে রায়পুর হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের বাড়িতে দেখা করে পরিস্থিতির বিস্তারিত বিবরণ দেন ছত্তিশগড় পুলিশের ডিজি ডিএম অবস্তি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে খবর আসে কাসালপাডের চিন্তাগুফার মিনপা জঙ্গলে বেশ কয়েকজন মাওবাদী লুকিয়ে আছে। এরপরই ছত্তিশগড় পুলিশের ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড(DRG) ও স্পেশাল টাস্ক ফোর্স(STF)-এর যৌথ বাহিনীর প্রায় ২৫০ জন নিরাপত্তারক্ষী ওই এলাকায় মাওবাদী বিরোধী অভিযান শুরু করেন।
দুপুর পৌনে একটা নাগাদ তাঁরা যখন চিন্তাগুফা শিবিরের কাছে ঘোরাঘুরি করছেন তখন আচমকা জঙ্গলের মধ্যে থেকে গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন মাওবাদীরা। পালটা জবাব দেন নিরাপত্তারক্ষীরাও। ঘন ঝোপঝাড়ের আড়ালে থাকায় মাওবাদীদের ক্ষতির পরিমাণ জানা না গেলেও গুরুতর জখম হন ১৫ জন নিরাপত্তারক্ষী। নিখোঁজ হয়ে যান আরও ১৪ জন। রবিবার সকাল থেকে তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে ১৪ জওয়ানের দেহ উদ্ধার করে সিআরপিএফের কোবরা জওয়ানরা। অন্যদিকে আহতদের মধ্যে ৩জনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে।
এপ্রসঙ্গে সুকমা জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘চিন্তাগুফার কাছে মাওবাদী ও নিরাপত্তা রক্ষীদের মধ্যে বেশ কয়েকঘণ্টা ধরে গুলির লড়াই চলে। এর ফলে জখম হওয়া ১৫ জন জওয়ানকে এয়ারলিফট করে রায়পুরের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া তল্লাশিতে অংশ নেওয়া কয়েকজন জওয়ানের কোনও খোঁজ মিলছিলনা। পরে চিরুনি তল্লাশি চালানোর সময় তাঁদের দেহ উদ্ধার হয়। সব মিলিয়ে এখনও ১৭জনের মৃত্যু হয়েছে।”