নিজস্ব সংবাদদাতা: আগামী ৪৮ ঘন্টা পর শেষ হবে চতুর্থ দফার লক ডাউন। ৬৮দিনের পর এই লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়বে কিনা তা এখনও জানা যায়নি তবে জুন মাসে দেশে করোনা সংক্রমনের হার চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছবে এমনই হিসাব বলছে করোনার ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ। ওই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা ২০হাজার হতে পারে। এমনই সময়ে দাঁড়িয়ে করোনার হাত থেকে রক্ষা পেতে বঙ্গবাসীকে প্রায় ভগবানের ভরসাতে যাওয়ার সুযোগ করে দিলেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
আর সেই কারনেই ১লা জুন থেকেই রাজ্যের মন্দির, মসজিদ, গুরুদুয়ারা গুলি খুলে দেওয়ার অনুমোদন দিয়ে দিলেন তিনি। তিনি বলেন,”ট্রেনে গাদাগাদি করে যদি এতো লোক আসতে পারে, তাহলে মন্দির, মসজিদ, গির্জা কী দোষ করল? কেন্দ্র এমন করলে, কেন আমি সব বন্ধ রাখব? ১ জুন থেকে মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বার খুলবে। সকাল ১০টা থেকে মন্দির খোলা যাবে৷ এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে মানুষ একটু প্রার্থনা করার সুযোগ পাবে।”
শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে মূখ্যমন্ত্রী করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে খানিকটা হাল ছেড়ে দেওয়ার ভঙ্গিতেই বলেছেন,”প্রথম ২ থেকে ৩ মাস বাংলায় নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু করোনার মধ্যেই আমফান, জোড়া বিপর্যয়।”
শুক্রবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ধর্মস্থান গুলি খুলে দেওয়ার কথা বলে কিছু নিয়ম মানার পরামর্শ দিয়েছেন, “মন্দির মসজিদ গির্জা গুরুদ্বার খুললেও মানতে হবে বেশ কিছু নিয়ম। যেমন কোনও ধর্মস্থানে একসঙ্গে ১০ জনের বেশি ঢোকতে পারবেন না। প্রত্যেককেই মাস্ক পরতে হবে। মন্দির মসজিদে স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আর ধর্মস্থানে কোনও জমায়েতও করা যাবে না।”
মন্দির মসজিদ গির্জা খুললেও স্কুল এখুনি খুলছেনা অবশ্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুরো জুন মাস বন্ধ থাকবে স্কুল। ভিন রাজ্য থেকে এলে গ্রামে স্কুলেই কোয়ারেন্টাইন। কোয়ারেন্টাইনে ৭দিন রাখার পরে হবে করোনা পরীক্ষা। ১০দিন পরে করোনা না পেলে বাড়ি পাঠানো হবে।
৮ জুন থেকে সরকারি বেসরকারি অফিস পুরোপুরি খুলে যাবে। ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করা যাবে। জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া করোনার সঙ্গে লড়াই করতে গেলে অনেক কিছু বদলাতে হবে বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, একসঙ্গে সবাই বাজার করতে গেলে রোগ বাড়বে।
বাসে ২০জনের বেশি নেওয়া যাবে না বলে ফের একবার স্মরণ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি স্বীকার করে নেন যে, অনেক লোকসান হচ্ছে, কিন্তু কী করা যাবে? সাধারণ যাত্রীদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাসে ওঠার জন্য কন্ডাক্টরের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। বাসে যা আসন আছে, তাতেই যাবেন, দাঁড়িয়ে যাওয়া যাবে না। বাসে অবশ্যই মাস্ক পরুন, বাসে ওঠার সময় স্যানিটাইজ করুন। চা বাগান আর জুটমিলও ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।