নিজস্ব সংবাদদাতা: মোটামুটি ঠিকই ছিল যে বছরের গোড়াতেই নন্দীগ্রামে আসবেন মূখ্যমন্ত্রী। এতদিন তৃনমূলের তরফে প্রায় ফাঁকা ময়দান ছেড়ে রাখা হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীকে। কিন্তু তিনি দল ছাড়ার সেই জায়গার দখল নিতেই হবে তৃণমূলকে। শুভেন্দু দল ছাড়ার পর যে সব অভিযোগ করে এসেছেন তার জবাব দিতে হবে নন্দীগ্রামের মাটি থেকে। তাই বছরের প্রথমে নন্দীগ্রামেই নেত্রী সভা করবেন এমনটাই ঠিক হয়েছিল কিন্তু তিনি যে ৭ই জানুয়ারিকেই সভার জন্য বেছে নেবেন সেটা কে জানত? সেই ৭ই জানুয়ারি, যেদিন নন্দীগ্রামের মাটিতে অবশ্যই সভা করে থাকেন শুভেন্দু অধিকারী।
তৃনমূল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে ৭ই জানুয়ারি, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের শুরুর অন্যতম ওই দিনটাতেই তেখালি সেতুর পাশেই তালপাটি খালের দক্ষিণের মাঠে সভা করবেন তৃনমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামের তৃনমূল নেতা তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাপতি সেক সুফিয়ান জানিয়েছেন, “আমরা জানুয়ারি মাসেই নন্দীগ্রামে সভা করার জন্য নেত্রীর কাছে অনুরোধ করেছিলাম। নেত্রী সম্মতি দিয়েছেন যে ৭ই জানুয়ারি তিনি সভা করবেন। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। খবরটি আসার পরই খুশিতে ফেটে পড়েছেন নন্দীগ্রামের মানুষ। আমরা নিশ্চিত যে ওইদিন নন্দীগ্রামে জনপ্লাবন দেখবে বাংলা।”
এদিকে নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে নন্দীগ্রামে যে তিনটি দিন বিশেষ ভাবে পালন করা হয় তার মধ্যে ১৪ই মার্চ আর ১০ই নভেম্বর ছাড়াও রয়েছে ৭ই মার্চ। এই তিন দিন শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামের ওই সভাগুলিতে উপস্থিত থাকেন। নির্বাচনের আগে এবছরও তাঁকে থাকতেই হবে কারন দল ছাড়ার পর এবারই তাঁর প্রথম ৭ই জানুয়ারি। আর তৃনমূলের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে শুভেন্দু দলত্যাগের পর নন্দীগ্রামের মানুষ তাঁর পাশ থেকে সরে গিয়েছেন। সুতরাং তার জবাব শুভেন্দুকে দিতেই হবে।
অন্যদিকে এবছর ১০ই নভেম্বর নন্দীগ্রামের সভা শুভেন্দু যেমন করেছেন তেমনই পাল্টা সভা হয়েছে তৃনমূলের ব্যানারে যেখানে হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ফিরহাদ কে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলে ছিলেন, “১৩ বছর পরে মনে পড়েছে নন্দীগ্রামকে! এরপর ৭ই জানুয়ারি, ১৪ই মার্চ নন্দীগ্রামে আসবেন তো? সেই ৭ই মার্চ আসছেন মমতা। সুতরাং শুভেন্দু অধিকারীর ওই দিন নন্দীগ্রাম এড়ানোর উপায় নেই।
নিয়ম মাফিক ৭ই জানুয়ারি সকালের দিকে সভা করে থাকেন শুভেন্দু। অন্যদিকে মূখ্যমন্ত্রী কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে এসে সভা করবেন। নিশ্চিতভাবেই তাঁর সভা হবে দুপুরের পরে। দুটি সভাই দু’দলের কাছে প্রেস্টিজের। যে নন্দীগ্রামকে বোড়ে করে তৃনমূলের ক্ষমতায় আসা আর যে নন্দীগ্রামকে কেন্দ্র করে শুভেন্দুর শুভেন্দু হয়ে ওঠা সেই নন্দীগ্রাম এখন কার? তারই জবাব খুঁজতে এবার মমতা আর শুভেন্দুর দ্বৈরথ শুরু হচ্ছে কয়েকঘন্টার ব্যবধানে নন্দীগ্রামের মাটিতেই। নিশ্চিত ভাবেই এই খবরে উত্তেজনায় টানটান পূর্ব মেদিনীপুর কারন গোটা রাজ্যই এদিন চোখ রাখবে নন্দীগ্রামেই।