নিজস্ব সংবাদদাতা: সরকার ঘোষিত নীতির বাইরে গিয়ে পছন্দ মত লোকেদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে বলে প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেন খড়গপুর শহরের ‘আমরা বামপন্থী’ সংগঠনের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার খড়গপুর টাউন হলের পৌর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান পাশাপাশি পোষ্টার লাগিয়ে দাবি করেন, যে নির্দিষ্ট শ্রেণীর জন্য বরাদ্দ ভ্যাকসিন নিয়ে স্বজন পোষন এবং দলবাজি করা হচ্ছে।
‘আমরা বামপন্থী’ খড়গপুরের নেতা অনিল দাস জানিয়েছেন খড়গপুর পৌরসভার দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র টাউনহল এবং তালবাগিচায় হকার, পরিবহনকর্মী এবং দোকানদারদের এই টিকা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই শ্রেণীর জন্য বরাদ্দ ভ্যাকসিন অন্যদের দেওয়া হচ্ছে যাঁদের মধ্যে রয়েছেন নিজেদের পছন্দমত লোক, দলীয় কর্মীরা। অর্থাৎ সরকারের বরাদ্দ ভ্যাকসিন নিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপোষন করা হচ্ছে। এই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন শাসকদলের কিছু নেতা এবং ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি।”
অনিল দাস বলেন, ‘প্রতিটি ব্যক্তি ভ্যাকসিন পান এটা আমরাও চাই এবং এটা আমাদের প্রধান দাবির মধ্যেই রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল যেখানে সরকারের বর্তমান ঘোষিত নীতিই হল এখন দোকানদার, হকার, পরিবহনকর্মী, শিক্ষক ইত্যাদি বিশেষ পেশাভুক্ত মানুষদেরই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাহলে তাঁদেরকে বঞ্চিত করে কেন অন্যদের দেওয়া হবে?”
উল্লেখ্য জনজীবন স্বাভাবিক করার উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ”সুপার স্প্রেডার’ হিসাবে চিহ্নিত ব্যক্তি যাঁরা অনেক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত তাঁদের আগে টিকাকরন করানো। যেমন হকার, দোকানদার, শিক্ষক, গনপরিবহন কর্মী প্রভৃতিরা দিনে বহুমানুষের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় তাঁদের নিজেদের সংক্রমিত হওয়া ও সংক্রমন ছড়ানোর সুযোগ থাকে। সরকার চাইছে চলতি পর্যায়ে এঁদেরকে টিকার আওতায় আনা। যে কারনে বর্তমানে
৬০বছরের নিচে সাধারনের টিকাকরন বন্ধ রয়েছে। এই পর্যায়ে কোথায় কোন গোষ্ঠীকে টিকা দেওয়া হবে তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যেমন খড়গপুর টাউনহল বা বিদ্যাসাগর আবাসন ও তালবাগিচা পৌরস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হকার, দোকানদার ও পরিবহনকর্মীদের টিকাকরন করার কথা। আমরা বামপন্থী সংগঠনের অভিযোগ এই নির্দিষ্ট বক্তিদের টিকা না দিয়ে তাঁদের বরাদ্দ টিকা অন্যদের দেওয়া হচ্ছে।
অনিল দাস বলেন, ‘ আমরা দেখতে পাচ্ছি গত ২০বছর ধরে যারা খড়গপুর কিংবা গিরিময়দান রেলস্টেশনে হকারি করছেন তাঁরা টিকার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন, বাসের চালক, কন্ডাক্টার, লরির চালক কিংবা হেল্পার, অটোচালক, টোটোচালক, রিস্কাওয়ালা ইত্যাদিরা টিকা পাচ্ছেননা। এরা যদি টিকা না পান তবে সংক্রমন রোখার নীতিটাই ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে।” বিষয়টি নিয়ে খড়গপুর মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হতে চলেছেন তাঁরা বলে দাস দাবি করেন, ‘ হকার ইউনিয়ন, ব্যবসায়ী সমিতি কিংবা পরিবহন ইউনিয়নগুলির কাছ থেকে নাম সংগ্রহের পরিবর্তে এলাকার নেতা বা কো-অর্ডিনেটারদের কাছ থেকে নাম নিয়ে টিকাকরনের নাম নেওয়ার ফলেই এই দুর্নীতি এবং স্বজনপোষনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। টিকাকরনের এই নীতিকে ভঙ্গকরা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।” আমরা বামপন্থীদের পক্ষে আরও দাবি করা হয়েছে এই সুপারস্প্রেডারদের তালিকায় গৃহপরিচারিকদের নাম রাখতে হবে। প্রচুর মহিলা এই পেশায় জড়িত। বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে সংগঠিত করছে আমরা বামপন্থী।