নিজস্ব সংবাদদাতা: পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু মিছিলের মানচিত্রে এবার সংযোজিত হল খড়গপুরের নাম।সোমবার সকালে খড়গপুর শহর লাগোয়া ৬ নম্বর হাওড়া-মুম্বাই জাতীয় সড়কে ঘুমিয়ে পড়া ক্লান্ত শ্রমিকের মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হল লরির তলায় পিষ্ট হয়ে। যদিও পুলিশের তরফে ওই শ্রমিক পরিযায়ী এটা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে খড়গপুর গ্রামীন থানার পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। মৃতের মোবাইল ও ব্যাগ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যার থেকে জানা গেছে সুকুমার পতি নামের ৪০ বছরের ওই শ্রমিক তার বাড়ি পুরুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে শনিবার রাতে ওই ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছিল খড়গপুর-মেদিনীপুরের সংযোগ স্থল চৌরঙ্গী থেকে ৬নম্বর জাতীয় সড়কের ডান দিকে কলকাতা অভিমুখের রাস্তায়। চৌরঙ্গী থেকে প্রায় ৩০০মিটার দূরত্বে থাকা একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে। কলকাতা অভিমুখের জাতীয় সড়কের ডান দিকের লেন ঘেঁষে এই পেট্রোলপাম্প।বিদ্যাসাগর শিল্প তালুকে প্রবেশের একটু আগেই, যেখানে ছোট ছোট কয়েকটি দোকানও রয়েছে। রাতে এখানেই খাওয়া দাওয়ার পর বিশ্রাম নিতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরির তলায় শুয়ে ছিলেন ওই ব্যক্তি। সম্ভবত অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে গাঢ় ঘুমে আছন্ন হয়ে পড়েন তিনি। সকালে সেই লরিটিই তাঁর ওপর দিয়ে চলে যায়। লরির চালক বা খালাসি খেয়াল বা অনুমান করেননি যে তলায় কেউ শুয়ে থাকতে পারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ব্যক্তির।
ব্যক্তি কেন লরির তলায় ঘুমোতে গেলেন সেটা অবশ্য জানা যায়নি। অনুমান করা হচ্ছে, করোনা সংক্রমনের কারনে আশেপাশের দোকানের সামনের চালার অংশে বিশ্রাম নিতে দেওয়া হয়নি ব্যক্তিকে। শনিবার ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছিল খড়গপুরে। সেই কারনেই হয়ত ওই ব্যক্তি লরির তলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারপর ঠান্ডা আবহাওয়ায় গাঢ় ঘুমে আছন্ন হয়ে পড়েন।
ব্যক্তি কোথা থেকে আসছিলেন সেই সম্পর্কে কোনও সুস্পষ্ট ধারনা পাওয়া যায়নি। স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে হিন্দি ভাষায় কথা বলতে গিয়ে তিনি নাকি জানিয়েছেন যে, বর্ধমান থেকে কলকাতা হয়ে আসছিলেন এবং যাচ্ছিলেন পুরুলিয়ার উদ্দেশ্যে। যদিও পুলিশ এখুনি মৃত ব্যক্তিকে পরিযায়ী শ্রমিক বলতে নারাজ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খড়গপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি তারপরই ব্যক্তির পেশা ইত্যাদি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’ মোবাইল সূত্র ধরে খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। যদি ওই ব্যক্তি সত্যি বর্ধমান কিংবা কলকাতা হয়ে আসেন তবে পুলিশকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। কলকাতা,হাওড়া,পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর এই চারটি রেড জোন জেলা স্বত্ত্বেও ওই ব্যক্তি কিভাবে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় প্রবেশ ও বেরিয়ে এলেন!