নিজস্ব সংবাদদাতা: শেষ অবধি কেন্দ্রের পথেই রাজ্যসরকার , রাজ্যকে ভাগ করা হতে চলেছে তিনটি জোনেই। মূখ্যমন্ত্রী প্রথমে বলেছিলেন রাজ্যে কোনও হটস্পট নেই। আছে মাইক্রো প্ল্যানিং। বাজার ঘাট করার কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে এসে মূখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন২১ মে পর্যন্ত লকডাউন থাকতে পারে ভেবেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য। এদিন নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন সংক্রমণের হার দেখে গোটা রাজ্যকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে কিছু ক্ষেত্রে ছাড়ও দেওয়া হবে। মূখ্যমন্ত্রী জানান, ”লকডাউন নিয়ে আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না, নিচ্ছে কেন্দ্র।তবে এ দিন প্রধানমন্ত্রীর শরীরী ভাষা দেখেও মনে হল এই অবস্থা চলবে। তাই আমরাও প্রস্তুতি রাখছি।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন,‘‘ ২১ মে পর্যন্ত সাবধানে চলতে হবে। আমি আগেও বলেছিলাম। ৪৯ দিন সাবধান থাকতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, রাজ্যে সংক্রমণের মাত্রা অনুসারে রেজ, অরেঞ্জ এবং গ্রিন জোন হিসাবে যে জায়গাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে তা প্রকাশ করা হবে। তার ফলে মানুষ নিজেরাই সচেতন হতে পারবেন এবং নিজেদের মতো করেই আরও সতর্ক থাকতে পারবেন।
মূখ্যমন্ত্রী যাই বলুননা কেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে দুটি কারনে চাপে রয়েছে রাজ্যসরকার। প্রথমত কেন্দ্র থেকে আসা পর্যবেক্ষক দলটি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে যে তথ্য সংগ্রহ করেছে তাতে একটা বিষয় পরিষ্কার যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে লকডাউন সঠিক ভাবে মান্য করা হচ্ছেনা, এবং সরকারেরও সে বিষয়ে খুব বেশি গা আছে বলেও মনে করছেনা কেন্দ্রীয় দলটি। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্র স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যানের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এবং নতুন করে সংক্রমনের হিসাবে গত সাতদিনের আক্রান্তের অনুপাতে পশ্চিমবঙ্গ ১০৭%, যা দেশের রাজ্যগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে রাজ্যে যে করোনার প্রকোপ বাড়ছে তা অস্বীকার করা যাচ্ছেনা।
রাজ্য যে যথেষ্টই চাপে রয়েছে তার আরও প্রমান মিলেছিল সোমবার সকালেই। সোমবার থেকে হাওড়ার জেলার চারটি থানা এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউন বলবৎ করা হয়েছে । এর ফলে খাদ্যসামগ্রী হোম ডেলিভারির মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে পা রাখার ক্ষেত্রেও চরম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মূখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন যে করোনা বিষয়ক মন্ত্রী গোষ্ঠী গঠন করা হয়েছে। তার সভাপতিত্ব করবেন অমিত মিত্র, থাকবেন ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান যে রাজ্যে হোম ডেলিভারির ক্ষেত্রে শুধু মাত্র অত্যাবশ্যক পণ্য নয়, সব পণ্যকেই ছাড় দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে রাজ্য সরকার করোনা মোকাবিলায় আরও কঠোর অবস্থান নিতে চলেছে এ বিষয়ে সন্দেহ নেই।