নিজস্ব সংবাদদাতা: চতুর্থ দফার লকডাউনে অনেক নিয়মকানুন শিথিল করা হলেও কোনও প্রকার প্রকাশ্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় জমায়েতে সম্পূর্ণভাবে নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। অথচ খড়গপুর শহরের রীতিমত মাইক বাজিয়ে একটি মাতাপূজা কমিটি পুজার পাশাপাশি অন্নদানের ব্যবস্থা করেছে এমন খবর পেয়েই পুলিশ রবিবার অভিযান চালিয়ে উপস্থিত জনতাকে সরিয়ে দিয়ে ২ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে। ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লকডাউনের নিয়মভাঙার পাশাপাশি ক্রিমিনাল অফেন্স বা সামাজিক অপরাধের দায়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশের এই অভিযানের বিষয়টি বিস্তৃতভাবেই দেওয়া হয়েছে খড়গপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের ফেসবুক পেজেও।জানা গেছে এসডিপিও সুকোমল কান্তি দাসের নেতৃত্বেই এই অভিযান চালানো হয় খড়গপুর রেল সেটেলমেন্ট এলাকার বাংলো সাইড বলে পরিচিত ফিফ্থ এভিনিউর ইউনিয়ন চার্চ সংলগ্ন এলাকায়। অভিযান চালানোর সময় ২কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত করে মাইক বাজানোর যন্ত্রপাতিও।
এদিকে এদিনই খড়গপুর সদর বিধায়ক তথা খড়গপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারকে তাঁর নিজস্ব পেজে পোস্ট করতে দেখা যায় যে তিনি ওই মাতাপুজোতে উপস্থিত। পেজে তিনি যা লিখেছেন তার মদ্দা কথা হল এবার পরিস্থিতির কারনে খড়গপুরের বিখ্যাত উৎসব মাতাপুজো ধুমধাম করে করা যায়নি, নম নম করেই পুজো সারতে হচ্ছে। তিনি যে পুজোতে ছিলেন তার বেশকিছু ছবিও তিনি পোস্ট করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যেখানে প্রকাশ্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেখানে তিনি উপস্থিত থাকলেন কি করে এবং তিনি উপস্থিত ছিলেন বলেই কি পুজো কমিটি সাহস পেয়েছে মাইক বাজিয়ে গন জমায়েত করে পুজো করার? এসডিপিও খড়গপুরের পেজে বলা হয়েছে ওখানে ৫০০ জনের জমায়েত ছিল যদিও সাধারন মানুষ বলছেন ১৫০০ মানুষেরও বেশি জমায়েত হয়েছিলেন ওখানে। বিষয়টি নিয়ে বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বেজে গেছে, তিনি ধরেননি।
ঘটনা হল বাংলো সাইডে যখন লকডাউনের নিয়ম ভাঙার এই কারবার চলছে তখন এই লকডাউন আইনের দোহাই দিয়েই মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ডেবরায় আটকে দেওয়া হয়েছে। তিনি তার সংসদীয় ক্ষেত্রে আসার জন্য কলকাতা থেকে রওনা দিয়েছিলেন। বর্তমানে লকডাউন নিয়ম বলবৎ রয়েছে এই কারন দেখিয়ে তাঁকে তাঁর সংসদীয় ক্ষেত্রে প্রবেশই করতে দেওয়া হয়নি পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে। ডেবরার শ্রীরামপুর এলাকা থেকেই দিলীপ ঘোষকে ফিরতে হয় কলকাতায়।
উল্লেখ্য লকডাউনের এই চতুর্থ দফায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে প্রকাশ্য সকল প্রকার ধর্মীয় আচরন এমনকি সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেও তা করা যাবেনা এটাই নিয়ম। প্রদীপ সরকার ওই মাতাপুজা মন্দিরে উপস্থিত যে ছবি পোস্ট করেছেন তাতে বেশ কয়েকটি জায়গাতে পরিষ্কার যে সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি। যদিও লকডাউন বিধি অনুযায়ী প্রকাশ্য ধর্ম আচরনটাই নিষিদ্ধ সেখানে সামাজিক বিধি মানা হল কি হলনা সেটা কোনও বিষয় নয়। এই রকম একটি অনুষ্ঠানে বিধায়ক উপস্থিত থাকেন কি করে সেটাই বড় প্রশ্নের। জানা গেছে প্রদীপ ওখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষন পরেই পুলিশ অভিযান চালায় সেখানে।