অশ্লেষা চৌধুরী:বনধ সফল করতে অভিনব পন্থা! কোথাও ফুটবল খেলা, কোথাও ক্যারাম, তো কোথাও আবার রাস্তা জুড়ে কাটাকুটি খেলায় মেতেছেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা।
বৃহস্পতিবার শিল্প ও কর্মসংস্থানের দাবীতে বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেন বামেরা। সেই অভিযানে ফের চখে পড়ে পুলিশের চিরাচরিত ভূমিকা। শুরু হয় ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। কলেজ স্ট্রিট থেকে শুরু হয় মিছিল। এদিকে নবান্ন অভিযান ঘিরে বিশৃঙ্খল এড়াতে যথেষ্ট তৎপর ছিল পুলিশও। এন এন ব্যানার্জী রোড ও ডোরিনা ক্রসিং-এর সংযোগ স্থলে মিছিল আটকাতে দ্বিস্তরীয় ব্যারিকেড করা হয়। মিছিল ধর্মতলার কাছে এস এন ব্যানার্জী রোডে পৌঁছলে তা আটকে দেয় পুলিশ। মেটাল ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন বাম কর্মী সমর্থকরেরা। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। আন্দোলনকারীদের আটকাতে জল কামানের ব্যবহার শুরু করেন পুলিশ কর্মীরা। এর পর রাজ্য সরকার বিরোধী স্লোগান তুলে ব্যারিকেড পেরোনোর চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। তখন লাঠি চার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ বাম কর্মী সমর্থকদের।
তারই প্রতিবাদে শুক্রবার রাজ্যজুড়ে ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে বামেরা। ধর্মঘটকে সমর্থন করেছেন ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকিও। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাংলায় বনধের ডাক দিয়েছে তারা। তাদের দাবী, ছাত্রদের উপর যেভাবে নির্বিচারে আঘাত হানা হল তা প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রের উপরই আঘাত। তাই গোটা রাজ্যের মানুষকে এই হরতালে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। সেইমতই শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে ১২ ঘণ্টার ধর্মঘট।
এদিকে ধর্মঘট ঠেকাতে তৎপর রয়েছে প্রশাসনও। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চলছে নজরদারি। সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মঘটীদের বিভিন্ন প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচির চিত্র ধরা পড়েছে। কোথাও পুলিশের সঙ্গে বচসা, বাদানুবাদও হয়েছে। আবার কোথাও ট্রেন-বাস আটকে অবরোধ করা হয়েছে।
তবে, রাজ্যের কিছু প্রান্তে বিক্ষোভের চিরাচরিত রাস্তা থেকে সরে কিছুটা অভিনব পন্থা বেছে নিয়েছেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। একদিকে হাওড়ার দাশনগরের শানপুর মোড়ে রাস্তা আটকে ফুটবল খেলতে শুরু করেন বাম কর্মী, সমর্থকরা। ডোমজুড় থানার সামনে হাওড়া-আমতা রোডে রাস্তা আটকে ফুটবল খেলতে দেখা গেল বাম কর্মী, সমর্থকদের। উত্তরপাড়ার জিটি রোডের ধাড়সা মোড়ে রাস্তায় ফুটবল খেলেন বাম সমর্থকরা। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে পথ অবরোধ শুরু হয়। অবরোধ তুলতে যাওয়ায় পুলিশকে ঘিরে কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখান বাম সমর্থকরা। পরে পুলিশ কর্মীদের হাতে চকোলেট তুলে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর বিল্ডিং মোড়ে যশোর রোডে বসে কাটাকুটি খেলতে দেখা যায় বাম কর্মী, সমর্থকদের। আটকে পড়ে গাড়ি। আবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং হাসপাতাল মোড়ে রাস্তায় ক্যারম বোর্ড পেতে খেলতে শুরু করেন ধর্মঘটীরা। এর ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ক্যানিং-বারুইপুর রোড।