অশ্লেষা চৌধুরী: গতকাল ছিল ভাই ফোঁটা উৎসব। উৎসবে মেতে উঠেছিল ছোট থেকে বড় সকলেই। ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে বোনেরা ভাইকে সকল বিপদের হাত থেকে রক্ষা ও ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে। তবে এক অন্য রকম ভাই ফোঁটার সাক্ষ্য রাখল রাজার শহর কোচবিহারের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। অভিনব এক উদ্যোগ নিলেন সেই সংস্থার সদস্যরা। গাছকে ফোঁটা দিয়ে ভাই ফোঁটা পালন করলেন তারা।
সোমবার সকালে ফোঁটার নিয়ম মেনে সংস্থার মহিলা সদস্যরা গাছকে ফোঁটা দিয়ে গাছ ভাইদের দীর্ঘায়ু কামনা করলেন। এদিন কোচবিহার শহরের স্টেশন চৌপথী এলাকায় প্রায় পাঁচশো বছরের প্রাচীন গাছে ফোঁটা দেন তারা।
কথিত আছে, সূর্যের কন্যা যমুনা তাঁর ভাই যমের মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনায় ফোঁটা দেন। সেই থেকে বোনেরা ভাইদের শুভ কামনায় এইদিনে ফোঁটা দিয়ে আসছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে নগর উন্নয়নের নামে যেভাবে গাছ কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করা হচ্ছে তা আগামী প্রজন্মের জন্য ক্ষতি কারক। তাই এই অতিমারী পরিস্থিতিতে বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত থেকে পরিবেশকে রক্ষা করার জন্য কোচবিহারের এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অভিনব ভাবে গাছ ভাই ফোঁটার ব্যবস্থা করে।
ভাই ফোঁটা উপলক্ষ্যে শহরের স্টেশন চৌপথী এলাকায় প্রায় পাঁচশো বছরের প্রাচীন গাছকে সাজিয়ে তোলা হয়। পাশাপাশি এদিন ভাই ফোঁটা উপলক্ষ্যে করোনা আবহে ছোট ছোট শিশুদের হাতে মাস্ক তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের জন্য মিষ্টি মুখের আয়োজন করেন সংস্থার সদস্যরা।
এই সংস্থার এক সদস্য বলেন, -“ ভাই ফোঁটার মাধ্যমে বোনেরা ভাইদের মঙ্গল কামনায় ফোঁটা দেয়। আমাদের ভাইদের পাশাপাশি গাছদের ও রক্ষা করার দ্বায়িত্ব রয়েছে এবং গাছ যদি বেঁচে থাকে তারা আমাদের রক্ষা করবে। যে ভাবে বিশ্ব উষ্ণায়নের নামে, নগর উন্নয়নের নামে এভাবে গাছ কাটার ফলে আজ সভ্যতা ধ্বংসের মুখে। গাছকে বাঁচাতে গেলে গাছকে রক্ষা করতে হবে, পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। এই বার্তা সমাজকে দেওয়ার জন্যই আজ এই ফোঁটার আয়োজন।”
ভাইফোঁটার এই উৎসবে গাছ রক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এই অভিনব উদ্যোগ পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টকারী মানুষদের কাছে একটি আদর্শ বার্তা ও সমাজের কাছে তারা সত্যিই এক অনন্য নিদর্শন স্থাপন করল।