নিজস্ব সংবাদদাতা: জেলায় আসছেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল অথচ জেলা সদর মেদিনীপুরে নয়, আসছেন খড়গপুর শহরেই। বুধবার রাত ৯ টা অবধি ঠিক হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৩২টি জায়গায় কন্টেনমেন্ট জোন গঠন করে পুরোপুরি লকডাউন করা হবে আগামী ৭ দিনের জন্য আর তার মধ্যে ১২টি হতে চলেছে খড়গপুর শহরে।
বুধবার সন্ধ্যা অবধি ঠিক হয়েছিল খড়গপুর শহরে কন্টেনমেন্ট জোন হবে ৯টি কিন্তু পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে পড়েছে যে খড়গপুর মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরীকে ফের নতুন করে শহরের করোনা মানচিত্র রদবদল করতে হয়েছে ৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ১২টি। সংক্ষেপে এটাই হল খড়গপুর শহরের করোনা মানচিত্র যা প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে বদল হচ্ছে। শহরের পরিধিতে ক্রমশই বড় করে নিজের জায়গা দখল করে নিচ্ছে করোনা অতিমারি আর সেকারনেই জেলা শহরে নয়, খড়গপুর শহরে আসছেন ডিজিপি বীরেন্দ্র যা এক কথায় নজির বিহীন।
মঙ্গলবার ঘাটালের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পরিদর্শন করতে গিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেছিলেন, মাস্ক না পরা, সামাজিক দূরত্ব না মানাতেই করোনার আক্রমন বাড়ছে খড়গপুর শহরে। সেই আশঙ্কাকে সত্যি প্রমানিত করে বুধবারই খড়গপুরে নতুন করে ৪জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে, অমীমাংসিত ফল এসেছে ৯টি ক্ষেত্রে যার থেকে মনে করা হচ্ছে বৃহস্পতিবার আরও নতুন করে একাধিক ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বুধবার জেলায় ৩৫টি অমীমাংসিত ফল এসেছে যার মধ্যে খড়গপুরেরই রয়েছে ৯ জন। এরথেকেই বোঝা যাচ্ছে কেন খড়গপুরকেই বর্তমানে জেলার করোনা কম্পনের এপিসেন্টার বা কেন্দ্র বলা হচ্ছে। আরও বড় কথা হল, জেলার অন্যান্য অংশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হলেও তা অস্থিতিশীল, মাঝে মধ্যে পজিটিভ বেরিয়ে পড়ছে কিন্তু খড়গপুরে গত সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিক ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে যাতে উদ্বেগে রয়েছে রাজ্য প্রশাসন আর তাই পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রাজ্য পুলিশের সর্বাধিনায়ক আসছেন খড়গপুরে।
জানা গেছে বৃহস্পতিবার ডিজি বীরেন্দ্র যেমন জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তা, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেবেন তেমনই তিনি দেখা করবেন, দক্ষিনপূর্ব রেলের খড়গপুর ডিভিশনের সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার বিবেকানন্দ নারায়নের সঙ্গে। বর্তমান পরিস্থিতিতে খড়গপুর শহরে রেল এলাকা এবং রেল বহির্ভূত পৌর এলাকায় পাল্লা দিয়ে যে কোভিড সন্ক্রমন বেড়েই চলেছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে রেলের কি উদ্যোগ রয়েছে , কোভিড মোকাবিলায় কোনো সমন্বিত ব্যবস্থা দুই প্রশাসন নিতে পারে কিনা তারই উত্তর খুঁজতে চান তিনি।
বৃহস্পতিবার শহরের সেই ১২টি কন্টেনমেন্ট জোন যা কিনা বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা থেকে আগামী ৭দিনের জন্য সম্পুর্ন লকডাউনের আওতায় চলে যাবে তার কয়েকটি পরিদর্শন করবেন।
এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, খড়গপুর পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ড পাঁচবেড়িয়া, ৬নম্বর ওয়ার্ড ভবানীপুর, ৯ নম্বর ওয়ার্ড কুমারপাড়া, ২০ নম্বর ওয়ার্ড ওল্ড সেটেলমেন্ট, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আরপিএফ ব্যারাক এবং নিমপুরার কয়েকটি অংশে মোট ১২টি কন্টেনমেন্ট জোন তৈরী করার কাজ শুরু হয়েছে। এই এলাকার মধ্যে থাকা মানুষজনদের কোনোও ভাবেই বাড়ির বাইরে যাওয়া চলবেনা।