নিজস্ব সংবাদদাতা: ১লা জানুয়ারির পর ৮ই মার্চ ফের খড়গপুর শহরের এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। খড়গপুর গ্রামীন থানার অন্তর্গত হিরাডিহি বা কেশিয়াশোল লাগোয়া চরলাডাঙ্গার মাঠ থেকে উদ্ধার হয়েছে ওই যুবকের রক্তাক্ত দেহ। তাঁর মাথায় ভারি কিছু দিয়ে আঘাত করার চিহ্ন রয়েছে। যুবকের বাড়ি খড়গপুর শহরের নিমপুরাতে বলেই জানা গেছে। ঘটনায় কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানিয়েছে রেলের নিমপুরা সাইডিং এলাকা যেখানে কয়লা, লৌহ আকরিক ইত্যাদি খালি করা হয় তারই লাগোয়া এলাকা এটি। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে একাধিক ব্যক্তি এখানে বসে মদ খেয়েছিল। তারপরই ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে নিহত যুবকের নাম কুনু মান্ডি। বয়স ২৫ বছর। খড়গপুর পৌর সভার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ক্ষুদিরাম পল্লীতে বাড়ি কুনুর। সে অন্য ব্যক্তির ট্রাক্টর চালাতো বলেই জানা গেছে। রেল সাইটে ওই ট্রাক্টর ভাড়ায় খাটত বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই সূত্রেই জায়গাটির সাথে তার পরিচয় ছিল।
পুলিশের অনুমান মঙ্গলবার রাতে মদের আসর বসেছিল এই ফাঁকা মাঠে। বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিল এই আসরে। সেখানেই বচসা বাঁধে নিহত যুবকের সাথে। আর তারপরই ভারি কিছু দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয় যুবকের মাথা।বুধবার ভোরে স্থানীয় ব্যক্তিরা মাঠের দিকে গিয়েছিল দৈনন্দিন কাজে। প্রথমে তাদেরই নজরে পড়ে দেহটি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, উপর্যুপরি কোনও বস্তু দিয়ে মেরে থেঁতলে দেওয়া হয়েছে মুখমন্ডল। যাতে মুখ পুরোপুরি বিকৃত করে দেওয়া যায়। চাপ চাপ রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে সারা মুখ জুড়েই। স্থানীয়দের মারফৎই খবর যায় খড়গপুর গ্রামীন থানায়।
পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা মৃত ঘোষনার পরই দেহ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের মর্গে। পুলিশ জানতে চাইছে নেহাতই নেশার ঘোরে হঠাৎই তৈরি হওয়া বচসার জেরে এই ঘটনা নাকি পরিকল্পনা মাফিক মদের আসরে বসিয়ে ঠান্ডা মাথায় খুন? এলাকা থেকে মদের বোতল সহ নানা সামগ্রী উদ্ধার করেছে পুলিশ। যে বস্তু দিয়ে মারা হয়েছিল তারও খোঁজ চলছে।
উল্লেখ্য চলতি বছরের প্রথম দিনেই খড়গপুর শহরের মধ্যেই মথুরাকাটি লাগোয়া বিবি রানী মাঠে খুন হয়েছিল ২৯ বছর বয়সী যুবক অর্জুন সোনকার। খরিদার বাসিন্দা অর্জুনকে গুলি করে খুন করা হয় রাত ৯টা নাগাদ। সেই ঘটনায় যদিও এখনও কেউ ধরা পড়েনি। তার প্রায় আড়াই মাসের মাথায় খুন হলেন শহরের ফের এক যুবক। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে সবাইকেই আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এরপর খুনের রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা চলছে।