নিজস্ব সংবাদদাতা: এক শিক্ষককে কুৎসিত গালাগালি ও মারধরের অভিযোগ উঠল খড়গপুর শহরের এক বিদায়ী কাউন্সিলারের স্বামীর বিরুদ্ধে। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি থেকে জয়ী হওয়া কাউন্সিলার সুনীতা গুপ্তা যিনি পরবর্তীকালে তৃনমূলকে পৌরবোর্ড গঠন করতে সাহায্য করেছিলেন এবং তৃনমূলে যোগ দেন তাঁর স্বামী রাজু গুপ্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি একজন শিক্ষককে এতটাই মারধর করেছেন যে তাঁকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। রাজু গুপ্তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই শিক্ষক সুব্রত হালদার।
খড়গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত রাখালগেড়িয়া জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক সুব্রত হালদার জানিয়েছেন, “আমার জামাইবাবু মনোজ পাল এলাকায় কেবল লাইনের ব্যবসা করেন। স্থানীয় খড়গপুর শহরের পদ্মপুকুর এলাকায় তাঁর অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। ১৯নম্বর ওয়ার্ডের যে অংশের পরিবারগুলিকে তিনি কেবল সংযোগ দিয়েছেন সেই পরিবারগুলির দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল যে তাঁরা ঠিকমত ছবি বা শব্দ শুনতে পাননা। কারন খুঁজতে গিয়ে আমরা বুঝতে পারি অপারেটিং অফিসের দূরত্বই এর কারন। তখন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত জামাইবাবুর বাড়ি থেকেই ওই সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করি আমরা। সেই মত জামাইবাবুর বাড়ি থেকে তার টানা শুরু করেছিলাম। রাজু গুপ্তার বক্তব্য ওই এলাকা দিয়ে কোনও তার টানা যাবেনা। কারন ওই এলাকায় রাজুর কেবল সংযোগ রয়েছে। আমরা রাজুকে বলি যে আমরা কোনোও নতুন সংযোগ দিচ্ছিনা। পুরানো সংযোগগুলিকে আরও ভাল পরিষেবা দিতেই নতুন তার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিন্ত রাজুর ওই একই বক্তব্য সে তার টানতেই দেবেনা।”
সুব্রত বলেন, “শনিবার রাজু আমার জামাইবাবুকে তার খরিদার অফিসে ডেকে পাঠায়। জামাইবাবুর শরীর খারাপ ছিল বলে সঙ্গে আমিও যাই। রাজু আমাদের ধমকায়, বলে আমাদের কেবল তার খুলে নিতে হবে। আমরা বলি ঠিক আছে আমাদের সময় দাও। রাজু বলে কোনও সময় দেওয়া যাবেনা, এখুনি খুলতে হবে। আমরা বলি এখুনি সম্ভব নয়। আমরা চলে আসি। এরপরই খবর পাই যে রাজু আমাদের তার ছিঁড়ে দিচ্ছে। খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। দেখি রাজু তার ছিঁড়ছে। আমি মোবাইলে ভিডিও করছিলাম ঘটনার। ওই সময় রাজু ছুটে আসে। কুৎসিত গালাগালি করতে করতে আমাকে কিল ঘুঁষি মারতে থাকে। আমার ঘাড়ে, মুখমন্ডলে মারে। মারের চোটে আমার মাথায় , ঘাড়ে চোট লেগেছে এতটাই যে আমাকে সিটি স্ক্যান অবধি করতে হয়েছে।”
রাজু গুপ্তার বক্তব্য, “মনোজ ও সুব্রত মিলে আমার ব্যবসার ওপর আঘাত হানার পরিকল্পনা নিয়েই ওরা এই তার টানছিল আমি বাধা দিয়েছি, গালাগালি করেছি ঠিকই কিন্তু মারধরের গল্প কাল্পনিক।”
যদিও রাজুর বিরুদ্ধে এলাকায় গায়ের জোর দেখানো, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আগেও। খরিদা বাজারে সবজি ব্যবসায়ী সহ ছোট দোকানদারদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করে এমন অভিযোগও রয়েছে। পুলিশ রাজুর বিরুদ্ধে এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেছে।