নিজস্ব সংবাদদাতা: তীব্র ভ্যাপসা গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত খড়গপুর শহরবাসীর। গত কয়েকদিন বৃষ্টি নেই শহরে। চ্যাটচ্যাটে ঘামে দিন ভর অস্বস্তি। ঘরে ফ্যান চালিয়েও আরাম নেই। রাতে ঘুমের দফারফা। খড়গপুর শহরে বর্তমানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমান ৭১শতাংশের কাছাকাছি। সকালে হালকা মেঘ আর বেলা বাড়লেই বাড়ছে গরম। গরমের কারন হিসেবে আবহাওয়া দপ্তর বলছে আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, রাজস্থান থেকে বিহার এবং উত্তরঙ্গের ওপর দিয়ে অসম পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা অবস্থান করছে। এছাড়াও বঙ্গোপসাগর থেকেও প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকেছে। যার জেরেই তৈরি হয়েছে এমন অবস্থা। নামেই আষাঢ় মাস কিন্তু মালুম হচ্ছে ভাদ্রের আবহাওয়া। এমন অবস্থায় দু’চার ফোঁটা বৃষ্টি হলে কার না ভালো লাগে! কিন্তু মনের ভালো লাগা আর বাস্তবের ভালো লাগার মধ্যে বিশাল ফারাক এই শহরে। বৃষ্টি হলে ভালো লাগে বটে কিন্তু আতঙ্কও বাড়ে শহরে, আবর্জনা আতঙ্ক।
রবিবার বৃষ্টি হয়েছিল শহরে। যদিও স্থানীয় মেঘে বৃষ্টি। গোটা শহর জুড়ে তাই সমান বৃষ্টি হয়নি। প্রেমবাজার, তালবাগিচা, রবীন্দ্রপল্লী কিংবা গোলবাজার, দেবলপুর, ইন্দা এলাকায় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হয়েছে কিন্তু ঝাপেটাপুর, কৌশল্যা, থেকে পুরানো বাজার, সাঁজোয়ালে বৃষ্টি হয়নি তেমন। ওদিকে আবার খরিদা, মালঞ্চতে মাঝারি বৃষ্টি হলেও নিমপুরা, আরামবাটি ভাসিয়ে দিয়েছে। বৃষ্টি কম বেশি যাই হোকনা কেন রবিবার সামান্য হলেও স্বস্তি দিয়েছিল শহরবাসীকে। কিন্তু ঘরের স্বস্তি মাঠে মারা গেছে পথে নেমে। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার ধারে ডাঁই হয়ে থাকা আবর্জনা ধুয়ে ধুয়ে নেমেছে পথে আর তাতেই আতঙ্ক শহরবাসীর। কৌশল্যা, পুরানো বাজার থেকে শুরু করে ইন্দা, গোলবাজার হয়ে খরিদা, মালঞ্চর একই ছবি। জানা গেছে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার পাশ কিংবা ডাস্টবিন থেকে ময়লা সরানো হচ্ছেনা ফলে এই অবস্থা। ফলে ওই আবর্জনা মাড়িয়েই চলতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
গোটা খড়গপুর শহরের অলিগলিতে এই আবর্জনা যন্ত্রণার পাশাপাশি অন্য যন্ত্রনা আরামবাটি কিংবা রবীন্দ্রপল্লী লাগোয়া হরিপুর এলাকায়। নিয়ম অনুযায়ী বর্ষার আগে রাস্তার দু’পাশে কাঁচা নালা গুলি চওড়া করে কাটা হয় আর পাকা নালা গুলির বিভিন্ন সংযোগ স্থলগুলো ভালো করে পরিষ্কার করা হয় যাতে অতিরিক্ত জল সহজেই বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এবছর সেসবের বালাই নেই। পৌর বোর্ড ভেঙে গিয়ে এখন প্রশাসক রাজ। কাউন্সিলররা কো-অর্ডিনেটর হয়ে বসে রয়েছেন। দিনগত পাপক্ষয়ের মত সময় কাটিয়ে দিলেই হয়। ফলে তেমন করে কাজই হচ্ছেনা পৌর এলাকায়। ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার জল উপচে পড়ে উঠোন ঘর ভরিয়ে দিচ্ছে। কাঁচা ঘর থাকলে দেওয়াল পড়ছে।
যদিও আবহাওয়া দপ্তর বলছে আগামী ২৪ ঘন্টা অর্থাৎ ২৯ জুন মঙ্গলবার সকালের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের কোনও জেলাতেই ভারী বৃষ্টির সেরকম কোনও সম্ভাবনা আপাতত নেই। পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় অর্থাৎ বুধবার সকাল পর্যন্ত দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মুর্শিদাবাদ ছাড়া আর কোথাও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। পাশাপাশি জেলাগুলিতে দিনের তাপমাত্রার সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না বলেও জানানো হয়েছে। যদিও শহরবাসীর প্রশ্ন এখনও পুরো বর্ষাকালটাই তো বাকি পড়ে আছে, তখন? ছবি ঋণ: জাহির চৌধুরী এবং উজ্জ্বল মুখার্জী