বিভূ কানুনগো: উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট নিয়ে রাজ্য জুড়ে যে বিক্ষোভ অশান্তি চলছে তার থেকে বাদ গেলনা খড়গপুর শহরও। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পেরিয়ে গেলেও ছাত্রদের দ্বারা ঘেরাও হয়ে রয়েছেন খড়গপুরের একটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সদস্যরা। ছাত্ররা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে তাদের জানানো হয়েছে যে তাদের ফলাফল অসম্পূর্ণ এসেছে। কেন তাদের রেজাল্ট অসম্পূর্ণ এসেছে তা না জানানো অবধি তারা নিজেরাও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ছাড়বেনা আর কাউকে যেতেও দেবেনা।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবারই বেরিয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল আর তারপরই রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে নানা অসঙ্গতি নিয়ে শুক্রবার বিক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা গিয়েছে পড়ুয়াদের। ব্যতিক্রম হয়নি খড়গপুরেও। খড়গপুরের কৌশল্যায় সিলভার জুবিলী বিদ্যালয়ে ১০ঘন্টা পেরিয়েও অব্যাহত রয়েছে বিক্ষোভ।
এদিকে ঘটনা হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ স্বয়ং মেনে নিচ্ছে যে ছাত্রদের এই বিক্ষোভের যথা সঙ্গত কারন রয়েছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রভাস রঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ছাত্রদের প্রতি সমব্যথী। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ যে পদ্ধতিতে ফলাফল নির্ধারণ করেছে তারপরেও কী কারণে এরা অকৃতকার্য বা অসম্পূর্ণ ফলাফল পেল তা জানতে চেয়ে আমরা ইতিমধ্যেই সংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সংসদের ডেপুটি ডিরেক্টর আমাদের আগামীকাল সময় দিয়েছেন। আমরা আলোচনার জন্য যাচ্ছি। ছাত্রদের কাছে অনুরোধ আমাদের কালকের দিনটা সময় দেওয়া হোক। আমরাও তাদের জন্য উদ্বিগ্ন।
বিক্ষোভরত এবং ঘেরাও করে রাখা এক ছাত্র গৌরব কুমার খটিক জানিয়েছে, ‘ গতকাল যখন আমরা জানালাম কিসের ভিত্তিতে আমাদের ফেল করানো হল তখন বলা হল আজ আসলে বলা হবে। আজ প্রথমে আমাকে বলা হল মাধ্যমিকের রেজাল্টের ভিত্তিতে আমাকে ফেল করানো হয়েছে। আমি প্রশ্ন করলাম তাই যদি হয় তবে মাধ্যমিকে যেখানে আমার ইংরেজিতে অত্যন্ত খারাপ রেজাল্ট ছিল তখন আমার এই উচ্চমাধ্যমিকে ইংরেজিতে ফলাফল ভালো হল কি করে? তখন আমাকে বলা হয় ইলেভেনের রেজাল্টের ভিত্তিতে ফেল হয়েছি আমি। আমি বললাম বেশ আমাকে ইলেভেনের রেজাল্ট দেখান। তখন আমাকে রেজাল্ট দেখানো হচ্ছেনা।”
এরকমই বিভিন্ন অসঙ্গতির কথা জানিয়েছে গোবিন্দ চক্রবর্তী, রবি পান্ডে, সৌম্যদীপ মাঝিরা দাবি করেছে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। বারবার শিক্ষকরা ছাত্রদের আবেদন জানায় অবরোধ তুলে নিতে। বলা হয় তাদের দাবি নিয়ে সংসদের সঙ্গে কথা বলবেন তারা। কিন্তু ছাত্ররা তাদের অবস্থান সম্পর্কে দৃঢ় থাকে। ইতিমধ্যে খবর আসে মেদিনীপুর থেকে আসা এক শিক্ষকের স্ত্রীর খুবই শরীর খারাপ। খালি তাঁকেই ছেড়ে দেয় ছাত্ররা। ম্যানেজিং কমিটির কর্মকর্তা অজয় চট্টোপাধ্যায় ও শিক্ষক, শিক্ষকর্মী সহ ১৫জনকে আটকে রেখেছে ছাত্ররা। শেষ খবর পাওয়া গেছে সাড়ে আটটা নাগাদ বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে আগামীকাল থেকে টানা ঘেরাও কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ছাত্ররা।