নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রয়াত হলেন খড়গপুরের কৃতি সন্তান, সঙ্গীতাচার্য বিশ্বনাথ মিশ্র। খড়গপুর শহর তাঁকে চিনত বিশু মিশ্র নামেই। বুধবার, ৭ই অক্টোবর ভোর ৪টা নাগাদ মেদিনীপুর শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে জীবনাবসান হয় ৮৪ বছর বয়সে। খড়গপুর ট্রাফিক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে অবসর গ্রহন করেন প্রয়াত মিশ্র। পেশাগত ভাবে তিনি যেমন স্কুল শিক্ষক ছিলেন তেমনই সঙ্গীত জগতেও তাঁর পরিচয় সঙ্গীত গুরু হিসাবে। অসংখ্য গুণমুগ্ধ ছাত্রছাত্রী রেখে গেলেন তিনি যাঁরা তাঁর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা নিয়ে প্ৰতিষ্ঠিত শিল্পী হিসেবে আজ পরিচিত।
১৯৩৪ সালে খড়গপুর শহরের রেল আবাসনে জন্মেছিলেন তিনি। বাবা ছিলেন রেল কর্মচারী। স্কুল জীবন ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতনে, স্নাতক হয়েছেন খড়গপুর মহাবিদ্যালয়ে। তারপর খড়গপুরেই শিক্ষকতা। ফুটবলের পাশাপাশি দৌড় ক্রীড়ায় অসামান্য নিপুনতা ছিল স্কুল জীবনে। তারপর সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। সেখানেও অসম্ভব দক্ষতার প্রমান রাখেন। পরের দিকে প্রতিষ্ঠা করেন সঙ্গীত শিক্ষার প্রতিষ্ঠান উত্তরায়ন। যেখান থেকে খড়গপুর তথা বাংলা পেয়েছে এক ঝাঁক বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীকে।
খড়গপুর তথা বাংলার জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী সৌমেন চক্রবর্তী বলেন, “আমরা যারা পরবর্তী প্রজন্মে সঙ্গীত চর্চা করছি আমাদের অভিভাবক ছিলেন বিশ্বনাথ মিশ্র। নিরন্তর আমাদের পরামর্শ দেওয়া, উদ্বুদ্ধ করার কাজ করে যেতেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে খড়গপুরে সঙ্গীতচর্চার অন্যতম পুরোধা ছিলেন আজাতশত্রু মানুষটি। আমরা একজন গুনী অভিভাবককে হারালাম।”
শুধুই সঙ্গীত নয়, খড়গপুরের শিল্প সাহিত্যচর্চা ও আন্দোলনেও তাঁর অবদান রয়েছে। যাঁরা শিল্প সাহিত্য চর্চা করেন তাঁদের সাথেও যোগাযোগ ছিল তাঁর। নিমগ্ন শ্রোতা হিসাবে উপস্থিত থাকতেন সেখানে। আলোচনায় রাখতেন নিজস্ব মতামত। বামপন্থার প্রতি তাঁর আস্থা ও বিশ্বাস শেষদিন অবধি অটুট ছিল কিন্তু তার জন্য অন্য মতালম্বীর জন্যও তাঁর মনের দরজা ছিল হাট করে খোলা। আর সেই কারনেই তিনি সবার অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। তাঁর মৃত্যু একটি যুগের অবসান ঘটিয়ে গেল।