নিজস্ব সংবাদদাতা: মঙ্গলবার খড়গপুর শহরের কৌশল্যা এলাকায় এক রেশন দোকানকে ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল জনতা। টানা ২২ দিন ধরে রেশন দেওয়া হচ্ছেনা এমনই অভিযোগে পথ অবরোধে সামিল হয় জনতা। পুলিশ এসে তৎপর হয় অবরোধ তুলে দিতে এবং জনতাকে আশ্বস্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার। বুধবার সেই রেশন কাউন্টার সিল করে দিল খড়গপুর খাদ্য নিয়ামক দপ্তর। দপ্তরের তরফে একটি নোটিস দিয়ে বলা হয়েছে জুন মাসের রেশন গ্রাহকদের দেওয়া হবে ঝাপেটাপুর এলাকার সন্তোষ আগরওয়ালের কাউন্টার থেকে আগামী ২৫ তারিখ সকাল ৮টা থেকে আর এরপর থেকে সমস্ত রেশনই পাওয়া যাবে ওই ৫৮ নম্বর দোকান থেকেই। সোজা কথায় বিশ্বরূপ দাস চৌধুরীর দোকানটি বন্ধ করে দিল খাদ্য নিয়ামক।
মঙ্গলবার অবশ্য জনতার বিক্ষোভের পরেই খড়গপুর শহরের খাদ্য নিয়ামকের অন্যতম অধিকর্তা জানিয়েই দিয়েছিলেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা কিন্তু সেটা যে মাত্র ২৪ঘন্টার মধ্যেই নেওয়া হবে বুঝতে পারেননি স্থানীয় মানুষ। খাদ্য দপ্তরের এই ভূমিকায় খুশি তাঁরা। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য ছিল রেশন না দিয়ে চোরা পথে রেশন সরিয়ে দিচ্ছেন ওই রেশন ডিলার। তাঁদের আরও দাবি করেছিলেন গত মাসেও শেষের দিকে পর্যাপ্ত রেশন দেননি ওই ডিলার। ঘটনাক্রমে ওই রেশন ডিলার শহরের এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার আত্মীয় হওয়ায় বিজেপির পক্ষে থেকে দাবি করা হয়েছিল শাসকযোগ থাকার কারনেই বারবার বেনিয়ম করা স্বত্ত্বেও ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন ওই ডিলার।
২৫নম্বর ওয়ার্ডের ওই রেশন ডিলার বিশ্বরূপ দাস চৌধুরীর নিজস্ব কোনো ডিলারশীপ নেই তিনি সন্তোষ আগরওয়াল নামে এক ডিলারের রেশন নিয়েই একটি কাউন্টার চালাতেন যেখানে প্রায় ৩০০গ্রাহক আছে। সেই গ্রাহকরাই দাবি করেছিলেন গত ২২ দিন ধরেই বিশ্বরূপ দেব, কাল দেব করে রেশন দিচ্ছেই না। অভিযুক্ত বিশ্বরূপ বাবুর বক্তব্য ছিল ডিস্ট্রিবিউটর তাকে রেশন সরবরাহ করছেনা যার ফলে আমি রেশন দিতে পারেননি। ডিস্ট্রিবিউটর অজয় বাকলির বক্তব্য ছিল,”ওনাকে আমি রেশনের সামগ্রী কোনও দিনই সরবরাহ করিনি কারন উনি ডিলারই নন। এই এলাকার যিনি নথিভুক্ত ডিলার সেই সন্তোষ আগরওয়াল তাঁর প্রয়োজন মত রেশনদ্রব্য পেয়ে গেছেন।”
সন্তোষ আগরওয়াল জানিয়েছিলেন, ” আমি ডিস্ট্রিবিউটারের কাছ থেকে মাল পেয়েই বিশ্বরূপকে দিয়ে দিয়েছি। কারন ওই কাউন্টার উনিই দেখেন।” ঘটনাক্রমে বিশ্বরূপ বাবু খড়গপুর শহরের অন্যতম তৃণমূল নেতা বিবেকানন্দ দাস চৌধুরীর ভাইপো। বিজেপি তাই শাসক যোগেই অভিযোগ চাপা পড়ে যাওয়ার দাবি করেছিল। যদিও বিবেকানন্দ দাস চৌধুরীর বক্তব্য ছিল, “এই বিষয়ের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। অযথা এর মধ্যে রাজনীতি আনা হচ্ছে।”
মঙ্গলবারই খড়গপুর শহরের দায়িত্বে থাকা খাদ্য নিয়ামক দপ্তরের পরিদর্শক সৌম্য ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “এর আগেও বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আমরা কাউন্টারটা বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা ভাবনা করছি।” সেটাই বুধবার কার্যকরী করে দেখালো খাদ্য নিয়ামক।