নিজস্ব সংবাদদাতা: হঠাৎই চলে গেলেন খড়গপুর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রাক্তন অধ্যাপক মৃনালকান্তি ঘোষ দস্তিদার, ছাত্রছাত্রীদের কাছে যিনি MKGD নামেই পরিচিত ছিলেন। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার নিয়মিত রাতের খাবার খেয়েছেন এবং ঘুমোতে গেছেন। রবিবার সকাল ৭টা ২০মিনিট নাগাদ হঠাৎই অসুস্থতা বোধ করায় তাঁকে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সকাল ৮ টা ২৫মিনিট নাগাদ খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবার অভিযোগ করেছে, হাসপাতালে একজন জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসকই দেখে ভর্তি করে নেন অধ্যাপককে। স্যালাইন দেওয়া হয় কিন্তু কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাঁকে দেখেননি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫বছর। ঠিক একই অভিযোগ উঠেছিল ৪৮ ঘন্টা আগে প্রয়াত হওয়া খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার ও জনদরদী চিকিৎসক ডাঃ এম.এ.খান চৌধুরীর বেলায়।
মৃনালকান্তি তিনি শুধু অধ্যাপকই ছিলেননা, ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদও। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের ভাল বইয়ের চাহিদা মেটানোর জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের ওপর একাধিক বই লিখে গিয়েছেন অধ্যাপক ঘোষদস্তিদার। সেই সব দারুন জনপ্রিয়তা লাভ করে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। ১৯৬৫ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসাবে খড়গপুর কলেজে যোগ দেন। টানা ৪০বছর পড়ানোর পর ২০০৫ সালের ৩০শে জুন অবসর নেন।
পরের দিনই নেতাজী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-অর্ডিনেটর হিসাবে যোগ দেন। ২বছর কাজ করেছেন সেখানে। অবসরের পরে সাম্মানিক কিংবা অতিথি অধ্যাপক হিসাবে কখনও মেদিনীপুর কলেজ কখনও আবার রাজা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা বিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন।উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। এরকমই একজন কর্মঠ কর্মবীর শিক্ষবিদের আকস্মিক প্রয়ানে শোকস্তব্ধ শিক্ষা জগৎ।
অধ্যাপক ঘোষ দস্তিদারের পড়াশুনা ও বেড়ে ওঠা কলকাতার নারকেল ডাঙ্গায়। স্নাতকোত্তর পাশ করার পর স্থানীয় ছেলেমেয়েদের জন্য নিজের বাড়ির কাছেই স্থাপন করেছিলেন একটি বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল। দেশবন্ধু প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের সেই স্কুল আজও রয়েছে। অধ্যাপনা পাওয়ার পর চলে আসেন খড়গপুরে। বাড়ি করেছিলেন বিদ্যাসাগরপুরে। ২বছর আগেই তাঁর সহধর্মিণীর প্রয়ান হয়েছিল। ২পুত্র, পুত্রবধূ ও তাঁদের সন্তানসন্ততি ছাড়াও রেখে গেলেন প্রতিষ্ঠিত বহু ছাত্রছাত্রীদের। ছবি:অচিন্ত্য ত্রিপাঠী