নিজস্ব সংবাদদাতা: কন্টেনমেন্ট জোনে লুকিয়ে থেকেও শেষরক্ষা হলনা দাগী ৫ ব্যাঙ্ক ডাকাতের। নিজস্ব চর মারফৎ খবর পেয়ে ৫ দুষ্কৃতিকেই গ্ৰেফতার করতে সক্ষম হল খড়গপুর গ্ৰামীণ থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে শহরে এর আগেও ব্যাঙ্ক ডাকাতি সহ একাধিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত এই ৫ জন হল সোমনাথ ওরফে ভোটা চট্টোপাধ্যায় (৩২), অশ্লেষ ওরফে বাবু যাদব(৩২), রাজু ওরফে বাইচুং সরেন (৩৭), অজয় ওরফে ছোটকা সিং (৩২) ও রাকেশ ওরফে কালিয়া বেরা(৩৫)। এঁদের মধ্যে প্রথম চারজনের বাড়ি খড়গপুর টাউন থানার আরামবাটি এলাকায়। আর শেষোক্ত জনের বাড়ি খড়গপুর টাউন থানার ছোটো আয়মা এলাকায়।
উল্লেখ্য কয়েকদিন আগেই খড়গপুর গ্রামীন থানা এলাকার লছমাপুর এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে নিয়ে রাতের অন্ধকারে শাটার ভেঙে ঢুকেছিল ডাকাতের দলটি কিন্তু ব্যাঙ্কের ভল্ট ভাঙতে ব্যর্থ হয় তারা। এরপরই আত্মগোপনে চলে যায় ডাকাত দলটি। পুলিশ জানিয়েছে ওই ডাকাতির চেষ্টার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে ছিল সোমনাথ ওরফে ভোটা। ভোটা এর আগেও একাধিক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল। সাধারণ ভাবে অপরাধ করার পর ভোটা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গা ঢাকা দিত। কিন্তু এবার নিজের আরামবাটি এলাকাটি কন্টেনমেন্ট জোন হওয়ায় সেখানেই আত্মগোপন করে সে। তার হয়ত ধারণা ছিল কন্টেনমেন্ট জোনে পুলিশের নজরদারি থাকবেনা। কিন্তু তার সেই ধারনা ব্যর্থ করেই সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওইদিন আরামবাটি থেকে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ তল্লাশি চালায় খড়গপুর শহরের আরেক কন্টেনমেন্ট জোন ছোট আয়মাতেও। সেখান থেকে তোলা হয় কালিয়াকে। মঙ্গলবার জেলা আদালতে হাজির করে সোমনাথ ওরফে ভোটা চট্টোপাধ্যায়ের চারদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। আর বাকি চারজনের ১৪ দিনের জেল হাজত হয়েছে। উল্লেখ্য গত ৮ তারিখ এবং ১১তারিখ দুটি ঘোষনায় আরামবাটি ও ছোট আয়মার কয়েকটি এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জোন বলে ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
পুলিশ জানিয়েছে সোমনাথ ওরফে ভোটা চট্টোপাধ্যায় লছমাপুর এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা করে ভল্ট ভাঙতে ব্যর্থ হওয়ার পর নিজের সঙ্গীদের নিয়ে ব্যাঙ্কের সিসিটিভি ক্যামেরাটি ভেঙে দেয় এবং তার হার্ড ডিস্ক নিয়ে পালায়। তার ধারনা ছিল এতে হয়ত পুলিশ তাকে সনাক্ত করতে পারবেনা। কিন্তু সে বুঝতে পারেনি ব্যাঙ্কের বাইরে থাকা স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েতে কার্যালয়ের দুটি সিসিটিভি ক্যামেরায় তার অস্তিত্ব ধরা পড়ে গেছে। সোমনাথকে ধরে গত শনিবার হওয়া ডাকাতির চেষ্টায় আরও কারা কারা জড়িত ছিল তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
অন্যদিকে বাকি চারজনের বিরুদ্ধে পুরানো ডাকাতির মামলা সহ আরও কয়েকটি অপরাধের মামলা রয়েছে। আপাতত তারা জেল হেফাজতে রয়েছে। পরবর্তী কালে প্রয়োজন হলে তাদেরকেও নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন খড়গপুর মহকুমা পুলিশ শাসক তথা SDPO দীপক সরকার। উল্লেখ্য এই নিয়ে গত ২৪ঘন্টায় মোট ১১জন দাগী দুস্কৃতি গ্রেপ্তার হল খড়গপুর শহর থেকে। সোমবার রাতে অন্য একটি ঘটনায় খড়গপুর শহরের বিএনআর ময়দান থেকে ভিন রাজ্যের এক দুষ্কৃতি সহ ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে খড়গপুর শহর পুলিশ। তাদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩টি তাজা কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।