নিজস্ব সংবাদদাতা: এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় একই সাথে মৃত্যু হল চারজনের। বৃহস্পতিবার ভোরে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে খড়গপুর গ্রামীন থানার অন্তর্গত মুম্বাই-হাওড়া ৬নম্বর জাতীয় সড়কের হরিনা নামক স্থানে। খড়গপুর শহর থেকে ২০কিলোমিটার দূরে এই ঘটনাটি ঘটেছে ভোর ৩টা নাগাদ যখন কলকাতাগামী একটি ১০চাকা লরির পেছনে গিয়ে ধাক্কা মারে সেই গাড়িটি যাতে মৃত চারজন ছিল। খড়গপুর গ্রামীন থানার পুলিশ জানিয়েছে মৃত চারজন হলেন মুস্তাফা মন্ডল, আয়নাল হক মন্ডল,সুশান্ত দাস ও প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য। এঁরা প্রত্যেকেই উত্তর ২৪পরগনা জেলার ধান্যকুড়িয়ার বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে খড়গপুর এবং সংলগ্ন এলাকায় কয়েকটি ব্রয়লার ফার্মে মুরগীর ছানা সরবরাহ করা এবং মাংসের জন্য উপযুক্ত হয়ে ওঠা মুরগী গুলোকে ফার্ম থেকে কোম্পানির নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার জন্যই বরাদ্দ ছিল ওই হতভাগ্য মৃতদের গাড়িটি। বুধবার গভীর রাত অবধি কয়েকটি ফার্ম থেকে ব্রয়লার সংগ্রহের পর সেগুলি গাড়িতে বোঝাই করে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল ওই গাড়িটি। গাড়িটার সামনের অংশেই বসেছিল চারজন। জাতীয় সড়কের মাদপুর ঘাট অতিক্রম করে হরিনার কাছাকাছি ওই গাড়িটার সামনেই ছুটছিল একটি লরি।
রাস্তা ফাঁকা হওয়ায় ২টি গাড়িই জোরালো গতিতেই ছুটছিল। এই সময় রাস্তার ওপরে শেয়াল কিংবা কুকুর জাতীয় কোনও প্রাণী এসে পড়ায় আচমকাই ব্রেক কষে। আর তখনই পেছনে থাকা মুরগি বোঝাই গাড়িটা সরাসরি ধাক্কা মারে লরিটাকে আর গাড়িটা সামনের গাড়ির পেছনের অংশে ঢুকে যায়। দুমড়ে মুচড়ে গুঁড়িয়ে যায় গাড়ির কেবিন। ফলে কেবিনের থাকা চারজনেরই ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
ঘটনার কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছায় রাস্তায় টহলরত পুলিশ ভ্যান এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের গাড়ি। ছুটে আসে স্থানীয় লোকজনও।
তাঁরাই মৃতদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। সেখানেই ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহগুলি উত্তর ২৪পরগনা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়েই মেদিনীপুর পৌঁছে যায় মৃতদের পরিজনেরা। পুলিশ দুটি গাড়িকেই আটক করেছে। পুলিশের প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে মুরগি বহনকারী গাড়ির চালক অসতর্কতায় কিংবা ঘুমে চোখ লেগে যাওয়াতেই এই ঘটনা ঘটে যায়।
খড়গপুর পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ” রাস্তার দুদিকেই তিনটি লেন রয়েছে। রাতের বেলায় যেখানে ফাঁকা রাস্তা সেখানে দ্রুত গতিতে থাকা দুটি গাড়ি একটির পেছনে আরেকটি ছুটবে কেন? আর ছুটলেও পেছনের চালক সতর্ক থাকলে অনায়াসে অন্য লেনে চলে যেতে পারত দুর্ঘটনা এড়াতে। তাহলে এই দুর্ঘটনা ঘটে কী করে? নিশ্চিত ভাবেই চালক ঘুমিয়ে পড়েছিল অথবা অসতর্ক ছিল। তাছাড়াও চালক স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”