নিজস্ব সংবাদদাতা: দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করতেই শাসকের কালো তালিকায় চলে এসেছেন মুনমুন তথা দেবাশিস চৌধুরী। ৩০ঘন্টা আগে দলের দায়িত্ব ছাড়ার কথা শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া এবং মিডিয়াকে স্পষ্ট করে দেওয়া যে কথা দিয়েও কথা রাখেননি দলনেত্রী কার্যত অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে খড়গপুর সহ সারা পশ্চিম মেদিনীপুর এবং তৃনমূলের রাজ্য নেতৃত্বকে।
অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আগামী দুটি পর্বে নির্বাচন হতে যাওয়া ৫৮ টি আসনের ৫৭টিতেই বিজেপি প্রার্থী ঘোষণা করলেও রয়ে গেছে খড়গপুর সদরের প্রার্থী ঘোষণা আর এই ঘোষণা বকেয়া রয়েছে সেই মুনমুন চৌধুরীর জন্যই এমনটা ভেবে। মুনমুনের ঘনিষ্ট মহল বলছে তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন ৯ তারিখের পর, মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়া শেষ করে। সেক্ষেত্রে ১০তারিখই হয়ে যেতে পারে তাঁর নাম ঘোষনা কিন্তু তার আগে মুনমুন চাইছেন তাঁর নিরাপত্তার ব্যাপারটি দেখা হোক কারন এই বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে যদি বিজেপির হয়ে তাঁর প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে লড়তেই হয় তাহলে নিরাপত্তা একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
বিষয়টা নিয়ে একমত বিজেপিও কারন তৃনমূলের অনায়াস জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন তিনি শুধু তাই নয় তাঁকে ঘিরেই দেড় বছর আগে হাত ছাড়া হওয়া খড়গপুর বিধানসভা কেন্দ্র ফিরে পেতে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছে বিজেপি। প্রশ্ন উঠেছে কী ধরনের নিরাপত্তা পাবেন মুনমুন? সেটা ঠিক করার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে বিষয়গুলি মাথায় রাখছে তাহল মুনমুনের প্রোফাইল। সেই প্রোফাইল নাড়াচাড়া করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে
২০০৯থেকে জঙ্গলমহলে যাতায়াত শুরু। শুভেন্দু অধিকারী ঝাড়গ্রাম কিংবা লালগড়ে গেলে খড়গপুর থেকে উঠিয়ে নিয়ে যেতেন তাঁকে। নিন্দুকেরা বলেন গোড়ায় মাওবাদীদের (জন সাধারনের কমিটি)সঙ্গে সখ্যতা কিন্তু ২০১১ থেকে চরম শত্রুতা, ২০১১ সালের শেষের দিক থেকে জঙ্গলে মাওবাদীদের প্রভাব কমে গেলেও টার্গেটে রয়ে গেছিলেন। কারন জঙ্গলমহলে দলের সংগঠন দেখেছেন।
পাশাপাশি খড়গপুর শহরে একদল মাফিয়ার নজরে চিরকাল। রামবাবু এন্ড কোম্পানীর বিরুদ্ধে রয়েছেন সেই গৌতম চৌবের সময় থেকেই। রামবাবু জেলে কিন্তু তার অনুগতদের অনেকেই এখনও জেলের বাইরে, এই শহরেই যাদের কেউ কেউ এখনও অন্ধকার জগতে সক্রিয়। রামবাবু সহ এই অংশের মাথায় এখন শাসক দলেরই হাত। অন্যদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে হলেও সক্রিয় নিহত মাফিয়া ডন শ্রীনু নাইডুর বেশ কিছু অনুগামী, এরাও বিরোধী মুনমুন চৌধুরীর আর সবার শেষে তৃনমূল ত্যাগ করে বিজেপির দিকে ঝুঁকলে শাসকের ক্রোধ। এরকম অবস্থায় মুনমুন চৌধুরীর কী ধরনের নিরাপত্তা পাওয়া দরকার তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে একদিকে। যেমন ওয়াই নাকি জেড ক্যাটাগরির?
এ বিষয়ে এক শীর্ষ বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক নেতাদের চাওয়া বা সুপারিশ করার ওপরে কারও নিরাপত্তার ক্যাটাগরি ঠিক হয়না। যদি ঠিক হয় যে কাউকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া উচিত তবে তাঁর পুরো ইতিহাস এবং বর্তমান ঘেঁটে দেখেন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ক আধিকারিকরা কারন কাউকে নিরাপত্তা দেওয়ার পরও যদি তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন তবে তাঁর সম্পুর্ন দায়ভার শেষ অবধি নিতে হয় সেই সব আধিকারিকদের যাঁরা এই ক্যাটাগরি ঠিক করেন।’ ওই নেতা আরও বলেন, ‘পাশাপাশি নিরাপত্তা দিলেই কাজ শেষ হয়ে যায়না। নিরন্তর পর্যালোচনার মধ্যে রাখতে হয় বিষয়টি। প্রয়োজন অনুসারে তা বাড়ানোও হয়। মুনমুনের ক্ষেত্রেও তাই হবে। তাঁর যা নিরাপত্তা প্রাপ্য তিনি তাই পাবেন ।’ ছবি: দেবাশিস চৌধুরী ফ্যান ক্লাব