নিজস্ব সংবাদদাতা: নাই নাই করে ১০০থেকে ১১০ জন কর্মী পৌরসভার কিন্তু পুরো শ্মশানের নিস্তব্ধতা। মেরে কেটে ১০জন কর্মী এসেছে কিনা সন্দেহ। সাফাই বিভাগ, জন্ম মৃত্যু নিবন্ধীকরন, কর আদায় কোথাও কোনও লোক নেই আর তার মধ্যেই পৌরসভার বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি। বিজেপির দাবি শহরের ৩৫টি ওয়ার্ডকেই স্যানিটাইজ করতে হবে আর কর্মীদের দাবি পুরো পুরসভা স্যানিটাইজ করার পাশাপাশি তাঁদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।
মঙ্গলবার রাতে খড়গপুর পৌরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান সেক হানিফের করোনা পজিটিভ আসার পরই কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার সহ ৬সদস্যের পৌর প্রশাসক দলের সদস্য। কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন ২০জনেরও বেশি বিদায়ী কাউন্সিলর। পৌর কর্মীদের বক্তব্য, “তাহলে আমাদের কী হবে?” সেক হানিফের সংস্পর্ষে আসা খড়গপুর মহকুমা শাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বিধায়ক, সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ অনেকেরই নমুনা সংগ্ৰহ করা হবে করোনা পরীক্ষার জন্য। পৌরসভার কর্মীদের দাবি, যদি ওনাদের করোনা পরীক্ষা করা হয় তাহলে তাঁদের করা হবেনা কেন?
পুরসভার এক কর্মী জানান, ” পৌর প্রশাসকদের মধ্যে সেক হানিফ ছিলেন পৌরসভার অন্দরে সর্বাধিক সক্রিয়। সমস্ত ডিপার্টমেন্ট চষে বেড়াতেন। আমরা সবাই তাঁর সংস্পর্ষে এসেছি। যেহেতু উনি প্রায় কখনোই মাস্ক ব্যবহারই করেননি তাই আমাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাই সবচেয়ে বেশি। আমরা গতকালই পৌরসভার সিইওর কাছে লিখিত ভাই আবেদন করেছিলাম আমাদের সবারই কোভিড টেস্ট করা হোক। কিন্তু সেই দাবি মানা হয়নি ফলে আমরাও ঠিক করেছি নিজেরাই কোয়ারেন্টাইনে যাব। আগামী ১৪দিন বাড়িতেই থাকব।”
স্বাভাবিক ভাবেই খড়গপুর পুরসভার পরিষেবা কী হতে চলেছে তাই নিয়ে অনিশ্চয়তা শুরু হয়েছে। কর্মীদের দাবি তাঁদের করোনা পরীক্ষা করিয়ে নিরাপদ ঘোষণা করা হোক এবং পৌরসভা সমস্ত দপ্তরগুলিকে স্যানেটাইজ করা হোক তবেই তারা কাজে আসবেন। বিক্ষুব্ধ এই পৌরকর্মীদের মধ্যে তৃনমূল কর্মী ইউনিয়নের সদস্যরাও রয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবারই খড়গপুর পৌরসভার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে বিজেপি। তাঁরা দাবি করেছেন, পৌরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডকেই স্যানিটাইজ করতে হবে।
খড়গপুর শহর বিজেপির অন্যতম নেতা তথা বিজেপির রাজ্য সাধারন সম্পাদক তুষার মুখার্জী দাবি করেছেন, ” সেক হানিফ গোটা পৌর এলাকাকেই সংক্রমিত করেছেন। অবিবেচকের মত মাস্ক না পরে সারা শহর ঘুরে বেড়িয়েছেন। করোনা বিধি কিছুই মানেননি। ওনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।” পুরকর্মীদের দাবিকেও সমর্থন জানিয়ে তুষার মুখার্জী বলেন, “করোনা সংক্রমনের মুখে দাঁড়িয়ে জীবন হাতে করে যে কর্মীরা কাজ করছেন তাঁদের যদি পরীক্ষা না করানো হয় তো সরকার কাদের জন্য কাজ করছে?” সমস্যা হচ্ছে পৌর প্রশাসক থেকে বিদায়ী কাউন্সিরদের অধিকাংশই কোয়ারেন্টাইনে চলে যাওয়ায় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে কে?