নিজস্ব সংবাদদাতা: সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে খড়গপুর আর মেদিনীপুরে। গত প্রায় ১০ দিন যাবৎ তীব্র ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি একটু একটু করে কাটছে দুই শহরেরই। ভাদ্র পেরিয়ে আশ্বিন এসেছে দিন তিনেক আগেই কিন্তু পচা ভাদ্রের আমেজ কাটিয়ে শরৎ আসেনি এতদিন। সোমবার ভোর পাঁচটা নাগাদ শুরু হওয়া বৃষ্টির হাত ধরে অবশেষে শরতের আমেজ আসতে চলেছে দুই শহরেই।
ভোর ৪টা থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ার পর দুই শহরের আকাশেই রোদ উঠেছিল ঝলমলিয়ে কিন্তু বেলা ১টা থেকে কালো মেঘের দল দখল নিয়েছিল আকাশের। দুপুর ২টা থেকে ঝমঝমিয়ে ফের শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বেলা আড়াইটার সময় ঝড়ের ঝাপটা আর বজ্রপাতে। প্রবল বৃষ্টি আর কালো মেঘের দাপটে বেলা আড়াইটার সময় শহরকে নিয়ে গিয়েছে সন্ধ্যার আলোতে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভারত থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নেওয়ার কথা বর্ষার। কিন্তু উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নতুন করে নিম্নচাপ রেখা সৃষ্টি হওয়ায় পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে আপাতত পাততাড়ি গোটাচ্ছে না বর্ষা বলেই রবিবার জানিয়ে দিয়েছিল নয়াদিল্লির জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর।
সেই মত সোমবার সকাল থেকেই শুরু হয়ে গেল অবিরাম ধারাপাত। আবহাওয়া দপ্তর বলছে, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও ঘনীভূত হবে নিম্নচাপ।’ পূর্বাভাস মেনে সোমবার ভোর থেকে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি শুরু হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। আকাশও ঢেকেছে জমাট মেঘে। মঙ্গলবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে লাগাতার বৃষ্টি হবে বলে আগেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
হওয়া অফিস বলছে, ‘দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও ৩০ সেপ্টেম্বরই ভারতে শেষ হচ্ছে বর্ষা। এই ঘোষণার কোনও নড়চড় হওয়ার নয়। শনিবার রাজস্থানের কিছু অংশে বৃষ্টি হয়েছে। ওই অঞ্চলে বাতাসে জলকণার পরিমাণও যথেষ্ট। তবু সেপ্টেম্বরের শেষে বর্ষা বিদায় হচ্ছেই।’
পূর্বাভাস দিতে গিয়ে কী বলছে আবহাওয়া দপ্তর? জানা গিয়েছে, “আগামী ২-৩ দিনে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ রেখা আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে সরে যাবে। এর জেরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশার উপকূলবর্তী অঞ্চল, ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের একাংশে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা থাকবে। এ ছাড়া বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে অন্ধ্র প্রদেশ, ইয়ানাম, রায়লসীমা ও তেলেঙ্গানার অংশ বিশেষে। বঙ্গোপসাগর থেকে জোরালো জলকণাপূর্ণ বাতাস ভেসে আসায় সেপ্টেম্বরের ২১ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে হিমালয়ের পাদদেশ এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের।
এদিকে IIT-KHARAGPUR ওয়েদার ক্যাম্পাস রিপোর্ট বলছে আপাতত এই অঞ্চলের তাপ মাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও বিকাল ৩টার পর থেকে তা নামতে শুরু করবে। সেই হিসাব অনুযায়ী রাতে দুই শহরের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রিতে নামার কথা কিন্তু এই হিসাব ছিল বৃষ্টি না হওয়ার আগে। বৃষ্টিতে হিসাব বদলে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে এবং রাতে ২৩ ডিগ্রির নিচে নেমে যেতে পারে তাপ মাত্রা। এদিকে সোমবার বাতাসের গতিবেগ রয়েছে প্রতি ঘন্টায় ১০কিলোমিটার। বাতাস বইছে পূর্ব দিক থেকে যা ভালো লক্ষন। পুবালি বাতাসে হিমেল আমেজ থাকে। সব মিলিয়ে আজকের বৃষ্টির পর পাকাপাকি ভাবে জাঁকিয়ে বসতে চলেছে শরৎ। ছবি: অচিন্ত্য ত্রিপাঠী