নিজস্ব সংবাদদাতা: ফটিক জল, ফটিক জল করেই হাঁসফাঁস অবস্থা খড়গপুর মেদিনীপুরের। গত সাত দিন বৃষ্টির মুখ দেখেনি দুই শহর। তীব্র ভ্যাপসা গরমে জীবন ওষ্ঠাগত। এরই মধ্যে সুখবর এসেছে হওয়া অফিস থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের হাত ধরে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি আসছে। বৃষ্টি বলয়ে রয়েছে খড়গপুর মেদিনীপুরও। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার উত্তর বঙ্গেপসাগরে একটা নিম্নচাপের জন্ম নিতে পারে যার ফলে বৃষ্টি হতে পারে। ইতিমধ্যে মৌসুমি অক্ষরেখা উত্তর থেকে দক্ষিণে সরে এসেছে। এর ফলে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিও হতে পারে।
আবহবিদেরা জানান, মৌসুমি অক্ষরেখা হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে সরে আসতে পারে। মৌসুমি অক্ষরেখার সৌজন্যে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি প্রবল বৃষ্টি পেলেও সম্প্রতি দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার তেমন মেজাজ দেখা যায়নি। বরং কিছুটা ভ্যাপসা গরম মালুম হয়েছে। নতুন নিম্নচাপটি সেই পরিস্থিতি কিছুটা কাটাতে পারে। যদিও নিম্নচাপের প্রভাবে বেশি বৃষ্টি হবে ওডিশায়।
২ অগস্ট পর্যন্ত বর্ষায় উত্তরবঙ্গে ৪১% অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। যদিও দক্ষিণবঙ্গে ঘাটতি ৭%। সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গল ও বুধবার কলকাতার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ায়। বুধবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে পুরুলিয়, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলিতে। যেহেতু জুন মাসে গাঙ্গেয় বঙ্গে অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছিল তাই সামগ্রিক ভাবে হিসেবে এখন ঘাটতি কম। যদি দক্ষিণবঙ্গে অগস্টেও বর্ষার মেজাজ উপরে মুষড়ে থাকে তা হলে ঘাটতি তরতরিয়ে বেড়ে যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়ে চলছে। রবিবার থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমছে উত্তরের জেলাগুলিতে। তবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে মাঝেমধ্যে। সেইসঙ্গে তাপমাত্রাও বেড়ছে ধীরে ধীরে। ভারী বৃষ্টির জেরে জল বেড়েছে উত্তরবঙ্গের তিস্তা, তোর্সা, মহানন্দা, জলঢাকা নদীতে। শনিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে দোমোহানি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে জলঢাকা নদীতেও ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে মাথাভাঙা পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় দুপুর সাড়ে ১১টায় হলুদ সর্তকতা জারি হয়।
রাজস্থান থেকে আগ্রা হয়ে হিমালয়ের পাদদেশ হয়ে মণিপুর পর্যন্ত মৌসুমী অক্ষরেখা সক্রিয় থাকার কারণে প্রচুর জলীয় বাস্প ঢুকছে বঙ্গোপসাগর থেকে। তার জেরে বৃষ্টি ক্রমশ বেড়ে চলেছে। উত্তররের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে প্রবল বর্ষণ হয়েছে। বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে অসম ও বিহার।
হওয়া অফিসের অনুমান মতই ঘন কালো মেঘ জমেছে দুই শহরের মাথায়। সোমবার বিকাল ৪টা নাগাদ এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে মেদিনীপুর শহরে। বিকাল ৫টার পর ঘন মেঘ জমে আছে খড়গপুরের মাথাতে। ঠান্ডা হওয়া জানান দিচ্ছে মাটিতে ঝরে পড়ার অপেক্ষায় আছে বৃষ্টি। তবে কবে ?সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন!