নিজস্ব সংবাদদাতা: ২৯বছর বয়স, অর্থনীতিতে এমএসসি করে এম. ফিল সদ্য শেষ করেছেন। খড়গপুর শহরের পাঁচবেড়িয়ার ছেলে সাদ্দাম আলিকে অনেকেই ডাকে বাচ্চা কমরেড বলেই। বাচ্চা, এই কারনেই যে এখনও স্কুলে স্কুলে দৌড়ানো, লক ডাউনে পড়ুয়াদের জন্য বইয়ের ব্যবস্থা করা, ফ্রি কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা কিংবা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য মক টেস্টের ব্যবস্থা করা, সবই করে সাদ্দাম, পড়ুয়াদের সাদ্দাম দা।
গা থেকে এখনও ছাত্র গন্ধ যায়নি ভারতের ছাত্র ফেডারেশন বা এসএফআইয়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সভাপতি সাদ্দাম আলির।সেই সাদ্দামকেই এবার খড়গপুর গ্রামীন বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেছে দল। খবরটা আসতেই উল্লাসে ফেটে পড়েছে পাঁচবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ।
রাতেই সাদ্দামকে নিয়ে নেমে পড়েছেন শহর লাগোয়া গ্রামীন বিধানসভা এলাকায়। প্রার্থী ঘোষনার পরই তাঁকে নিয়ে রাতেই বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরেছেন কমল পলমল সহ স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। সতকুই, ওয়ালিপুর, নানকার, বরগাই একবার করে ঢুঁ মেরে দিয়েছেন রাতেই। শনিবার থেকে শুরু লম্বা সফর। এই দিনে সাদ্দামের নামে শুরু হয়ে গেছে দেওয়াল লেখা।
সাদ্দামের বিপরীতে তৃনমূলের বিদায়ী বিধায়ক, ৬৫ পেরুনো দীনেন রায়। বিধায়ক আছেন ঠিকই কিন্তু খুব স্বস্তিতে নেই। মাত্র ক’দিন আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করে দলীয় কর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে মহা মিছিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই কারনে রাজ্য নেতৃত্ব স্বয়ং মেদিনীপুরে এসে ম্যারাথন বৈঠক করে সেই ক্ষোভ সামাল দেন। উপরে উপরে সেই ক্ষোভ প্রশমন হলেও ভেতরে বাড়ছে চাপা অসন্তোষ। মাত্র ৫বছর বিধায়ক হওয়ার মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই মধ্যে স্বৈরাচারী মনোভাব, দুর্নীতি আর দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। দলত্যাগ করে কিছুদিন আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন দলেরই এক নেত্রী।
খড়গপুর গ্রামীন বিধানসভা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বামেদের ঘাঁটি ছিল প্রায় ৪দশক। এমন কি ২০১১সালেও দলের চূড়ান্ত দুর্দিনে এখান থেকে জিতে আসেন তিনবারের বিধায়ক নাজমুল হক। ২০১৬ সালে আসনটি হারায় সিপিএম। ৫বছরের ব্যবধানে জেলার তরুণতম প্রার্থী সাদ্দামের হাত ধরে সেই আসন ফের বামেরা পেতে পারে কিনা সেটাই এখন দেখার।