Homeএখন খবর২৭৪ কিলোমিটার পায়ে হেঁটেই খড়গপুর থেকে বীরভূমের পথে টাটা মেটালিকসের অস্থায়ী শ্রমিকের...

২৭৪ কিলোমিটার পায়ে হেঁটেই খড়গপুর থেকে বীরভূমের পথে টাটা মেটালিকসের অস্থায়ী শ্রমিকের দল

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ভোর পাঁচটায় খড়গপুর থেকে বেরিয়ে ২ঘন্টা পর ৭টার সময় ২০কিলোমিটার হেঁটে ভাদুতলায় যখন দু’জন পৌঁছালেন তখন শরীর ঘামে ভিজে জবজব করছেন। কিন্তু যেতে হবে আরও ২৫৪ কিলোমিটার! ভাবতেই গায়ে জ্বর আসছে কিন্তু করার কিছুই নেই। চলছে লকডাউন। কারখানা বন্ধ, বন্ধ গাড়ি ট্রেন। এদিকে পকেটে টান পড়েছে, পুঁজি প্রায় শেষ। এরপর বাড়ি না পৌঁছাতে পারলে করোনায় মরার আগেই না খেতে পেয়ে মরবেন তারা। তাই পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন বাড়ির দিকেই। এভাবেই হাঁটা শুরু করেছেন খড়গপুরের টাটা মেটালিকস এর কয়েকজন শ্রমিক।

শনিবার সাত সকালে ব্যাগ ব্যাগেজ নিয়ে ৬০ নম্বর বালেশ্বর-রানীগঞ্জ জাতীয় সড়ক ধরে হাঁটতে দেখা গেল এমনই দুই যুবককে। জিজ্ঞাসা করায় তারা জানায়, টাটা মেটালিকস এর শ্রমিক। একজনের নাম পিয়াস লেট, অন্যজন পুষ্পেন লেট। বাড়ি বীরভূম জেলার মল্লারপুর কহিনামোড় এলাকায়। লকডাউনে কারখানা বন্ধ। কদিন আর বসে থাকবো! তাই হেঁটেই বাড়ি যাচ্ছি।

খড়্গপুর থেকে বীরভূমের মল্লারপুরের দূরত্ব প্রায় ২৭৪ কিলোমিটার। পিয়াস বলেন, মনের জোরেই বেরিয়ে পড়লাম। ভোর ৫টায় খড়্গপুর থেকে বেরিয়েছি। ব্যাগে সামান্য কিছু মুড়ি নিয়েই বেরিয়েছি। রাস্তায় লরি যদি পায় তাহলে হাত দেখাবো। নাহলে হেটেই বাড়ি যাবো’। সুনশান রাস্তায় দুজনে খুব দ্রুত হেঁটে চলেছেন। ভোর ৫ টায় বেরিয়ে সকাল সাতটা নাগাদ পৌঁছে গেছেন শালবনির ভাদুতোলা এলাকায়। জিজ্ঞেস করে করে এগিয়ে চলেছেন। পিয়াসের সঙ্গী পুষ্পেন বলেন, ‘ভয় হচ্ছে রাস্তায় যদি পুলিশ ধরে! পরক্ষণে নিজেয় বলেন, ধরলে ধরবে, মারলে মারবে। সমস্যার কথা বুঝিয়ে বলব। বসে থাকলে তো আর চলবেনা। বাড়ির লোকজন কী করছে বুঝতে পারছিনা। যেমন করে হোক বাড়ি যেতেই হবে’।

জানা গিয়েছে, বীরভূম থেকে অনেকেই কারখানায় শ্রমিকের কাজে এসেছিলেন। মূলত বিভিন্ন ঠিকাদারি সংস্থার অধিনে অস্থায়ী কর্মী এরা। কেউ বাড়ি চলে গেছে, অনেকে এভাবেই হেঁটে যাচ্ছে। এক সঙ্গে সবাই হাঁটছে না। কারন একসঙ্গে গেলে যদি কেউ আটকায়। তাই গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে হেঁটে চলেছেন পথে পথে। হিসাব করে দেখা গেল প্রায় তিনদিন লেগে যাবে এঁদের বাড়ি পৌঁছাতে।

RELATED ARTICLES

Most Popular