নিজস্ব সংবাদদাতা: সপ্তাহ খানেক আগে একটি মামলা ছিল আরামবাটি এলাকায় তাও শহরে সংক্রমিত হননি তিনি। ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধা অন্য রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই তাঁর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। মামলাটা পুরোপুরি হাসপাতালেরই। কিন্তু আশ্চর্য জনক ঘটনাটি ঘটল ২১তারিখ যখন ওই এলাকায় এক ২৮ বছরের ছেলের করোনা ধরা পড়ল।
জানা গেল কয়েকদিন আগেই কলকাতা থেকে ফিরেছেন যুবক। প্রেসিডেন্সি জেলে কর্মরত জেল পুলিশের কর্মী। আরও জানা গেল জ্বর নিয়েই ফিরেছিলেন কিন্তু বাড়ির লোকের কাছে দিব্যি চেপে গেলেন। শোনা যায় প্রথম দিকে পাড়াতেও ঘুরে বেড়িয়েছেন। জ্বর ভাল হচ্ছেনা। ১৯তারিখ খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নমুনা দিলেন, ২১ তারিখ পজিটিভ রেজাল্ট। নিজেকে নাকি আইসো লেশনে নিয়েছেন। কিন্তু ততদিনে বাড়ির অনেকেরই জ্বর কাশি শুরু হয়েছে।
২২তারিখ পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে দেখে বাড়ির প্রত্যেকেই নমুনা দিলেন। ২৫ তারিখ পরিবারের ৫জনের পজিটিভ! এখন প্রশ্ন হল পাড়ার আর কার কার সাথে মিশেছিলেন যুবক, তিনি বা তাঁর পরিবারের লোকেরা না জেনেই কতজনকে সংক্রমিত করেছেন? কয়েকদিন আগে শুন্য থাকা আরামবাটিতে এখন ৬ জন আক্রান্ত সেটা কোথায় গিয়ে শেষ হয় সেটাই দেখার। পরিবারে আক্রান্ত ১০বছরের শিশুও। দায়িত্ব জ্ঞানহীনতাই পরিবার, পাড়া, শহরকে ডুবিয়ে দিচ্ছে। করোনা বাড়ছে কিন্তু মানুষের দায়িত্ব বোধ বাড়ছেনা। প্রশাসন কী করবে, কতটা করবে?
মঙ্গলবার ২০ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে শহরে। এদিন খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় আরও ৬ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। সব মিলিয়ে শহর ৫০০আক্রান্তের শহরে পৌঁছে যাবে এক দুদিনের মধ্যেই। কিন্তু গাফিলতির কোনোও খামতি নেই।
ঝাপেটাপুর এলাকার সিএম টাইপ রেল আবাসন। আক্রান্ত ৫ বছরের শিশু আর ৬০ বছর ছুঁতে যাওয়া বৃদ্ধ সমেত ৪ জন। গল্প সেই দায়িত্ব জ্ঞানহীনতাই। প্রথমে আক্রান্ত হয়েছেন বেসরকারি ফার্মে কাজ করা যুবক। বাড়ি থেকে কাজে গেছেন, বাড়ি ফিরেছেন কিন্তু বাড়ি ঢুকে হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা, বাড়ির বাইরে সামাজিক দূরত্ব মেনেছেন কী? ফলে পরিবারে ১০০% ই আক্রান্ত।
খরিদায় স্বামী-স্ত্রী, গোলবাজারে ২ভাই, ছোট আয়মা ও বড় আয়মায় পারিবারিক আদান প্রদানে তিনজন, সর্বত্রই পারিবারিক সংক্রমন। একটু সচেতন হয়ে করোনা শৃঙ্খল ভাঙার কোনোও
উদ্যোগই নেই। আক্রমনের উৎস এক, আক্রান্তের সংখ্যা একাধিক। ২০ জন আক্রান্তের ১৬ জনই পারিবারিক। মঙ্গলবার খড়গপুর শহরের আক্রান্তের মানচিত্রে ফের দেখা গিয়েছে ইন্দা বামুনপাড়া, পাঁচবেড়িয়া, শ্রীকৃষ্ণপুরের নাম।