Homeএখন খবরপজিটিভ শুনেই থমকে গেলেন খড়গপুরের চিকিৎসক, তারপরই সব শেষ, ৮৬ বছরেই থেমে...

পজিটিভ শুনেই থমকে গেলেন খড়গপুরের চিকিৎসক, তারপরই সব শেষ, ৮৬ বছরেই থেমে গেলেন ডাক্তারবাবু

নিজস্ব সংবাদদাতা: তোমার প্রথম টেস্টে পজিটিভ এসেছে কিন্ত ওটা কিছু নয়, পরের পরীক্ষায় কনফার্ম হওয়া যাবে, আপাতত তোমাকে কয়েকটা দিন আলাদা একটা ঘরে থাকতে হবে। চল একটা ঘর ঠিক করে ফেলি। শোনার পরই থমকে গেছিলেন চিকিৎসক। সোমবার বেলা সাড়ে তিনটা! বাগানের পরিচর্যা করছিলেন চিকিৎসক, হাত থেকে খুপরি টা পড়ে যায়।

এরপর ধিরে ধিরে শুইয়ে দেওয়া হয় বিছানায়। বাড়ি থেকে মাত্র ২ কিলোমিটারের মধ্যেই রেল হাসপাতাল যেখানে অবসর সময় অবধি নিজেই চিকিৎসা করেছেন। দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি চিকিৎসকরা। ততক্ষনে রেলের চিকিৎসকরাও জানতে পেরেছিলেন সকালের আ্যন্টিজেন টেস্টে পজিটিভ ফলাফল এসেছিল তার। তড়িঘড়ি শালবনী কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। খড়গপুর শহরের ১০ম মৃত্যুর তালিকাভুক্ত হয়ে গেলেন বিখ্যাত শহরের প্রখ্যাত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে রবিবার সকালেও নিজের চেম্বার করেছেন ৮৬ বছরের প্রখ্যাত চিকিৎসক। দুপুরে সামান্য অস্বস্তি বোধ করেন। রবিবার সন্ধ্যায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে স্থানীয় একটি নার্সিং হোম থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে গিয়ে অক্সিজেন দেওয়া হয় তাঁকে। সে রাতে ধকল সামলে নেন। সোমবার সকালে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। একটু বেলার দিকে রেলে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় সমস্ত কিছুই তখন স্বাভাবিক। আ্যন্টিজেন পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা দিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। দুপুরেও খুব স্বাভাবিক, নিয়মমত খাওয়া দাওয়া করে। বিকালের দিকে বাগানের পরিচর্যা করছিলেন।

সেই সময় রেলে হাসপাতাল থেকে ফোন করে পরিবারের এক সদস্যকে জানানো হয় যে, ‘ আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় ডাক্তারবাবুর পজিটিভ এসেছে। তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরেক বার আরটি/পিসিআর পরীক্ষার নমুনা নেওয়া হবে। আপাতত হোম আইসোলেশনে রাখুন স্যার কে।’ সেই খবরটাই তাঁকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। এরপরই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি কিন্তু আর এ যাত্রা ফিরে আসা হলনা।

শুধু রেল নয়, অবসরের পরে পরিষেবা দিয়েছেন আইআইটি খড়গপুর হাসপাতালে, পরিষেবা দিয়েছেন খড়গপুর বাসীকেও। তাঁর এই মৃত্যুতে তাই শোকাহত হয়ে পড়েছেন খড়গপুর শহরের ছোট ট্যাংরা কালী মন্দির সংলগ্ন এলাকা। শোকাহত গোটা খড়গপুর শহর। রাতের জন্য আপাতত রেল হাসপাতালেই রাখা আছে ডাক্তারবাবুর দেহ। মঙ্গলবার প্রশাসনিক ভাবে সৎকারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ডাক্তার বাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অনেকেই। শহরের বিশিষ্ট নাগরিক ও সমাজ সেবক সেন্ট জনস আ্যম্বুলেন্সের ব্রিগেডিয়ার অসীম নাথ বলেন, “এই বয়সেও যথেষ্ট সচল ছিলেন ডাক্তার বাবু। আমরা প্রত্যন্ত গ্রামে ক্যাম্প করেছি ডাক্তারবাবু গাড়ি নিয়ে ওষুধ সমেত চলে যেতেন চিকিৎসা করতে। ওনার মৃত্যুতে খড়গপুরের মানুষের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।”

RELATED ARTICLES

Most Popular