নিজস্ব সংবাদদাতা: মাত্র ১৫মিনিটের জন্য বাইরে গেছিলেন বাবা-মা, ঘরে ফিরে দেখলেন ৫ বছরের ছেলে টিভি আর মোবাইলে মশগুল আর পাশের ঘরে ফাঁসিতে ঝুলছে ১২বছরের ছেলে। তড়িঘড়ি তাকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে কিন্তু ততক্ষনে সব শেষ। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটেছে খড়গপুর পৌরসভার অন্তর্গত ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি রেল আবাসনে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত এগারোটা নাগাদ। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে দেহ তুলে দিয়েছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে রাতের খাবার খাওয়ার আগে মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য বাইরে গেছিলেন বাবা-মা। ছোট ছেলে মোবাইল ঘাঁটছিল আর বড় ছেলে টিভি দেখছিল। বাইরে থেকে ফিরে খাবার দিতে গিয়ে দেখা যায় ছোট ছেলে মোবাইল ঘাঁটছে, টিভি চলছে কিন্তু বড় ছেলের খোঁজ নেই। খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় পাশের ঘরে ঝুলছে ১২বছরের ছেলে।
কী কারনে এই ঘটনা খুঁজে তল পাচ্ছেনা পরিবার। মনে করা হচ্ছে কৌতুহল বশত এই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে সাউথ সাইড হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ওই ছাত্র। পুলিশ জানিয়েছে মৃত ছাত্রের নাম অভিষেক শাহ, বাবা রাজেশ কুমার শাহ। রাজেশ একটি বেসরকারি কারখানার কর্মচারী। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে রেলে চাকুরিরত এক আত্মীয়ের আবাসনে থাকেন।
রাজেশের বৌদি হার্টের রুগি। বুধবার রাতে ওই মহিলা ওড়িশা যাচ্ছেন কারন বৃহস্পতিবার তাঁর ভুবনেশ্বরে এক চিকিৎসকের আ্যপয়েনমেন্ট রয়েছে। একটি চারচাকা ভাড়ায় নিয়ে রাজেশের দাদা-বৌদি ওড়িশা যাচ্ছেন। গাড়ি ছাড়ার আগে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতেই রাজেশ ও তাঁর স্ত্রী গেছিলেন। বাড়ির সামনেই গেটের মুখে দু-চারটি কথা বলে ফিরে এসে দেখেন এই কান্ড!
ঠিক কেন এই ঘটনা তার ব্যাখ্যা নেই। ওই টুকু ছেলের মনে ঠিক কী ঘটেছিল তা জানা মুশকিল। মর্গে ম্যাজিস্ট্রেটের উদ্যোগে অনুসন্ধান বা এনকোয়েস্ট হয়েছে। কিন্তু তাতে কী? বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন দীর্ঘ লকডাউনে সব চাইতে দিশেহারা শৈশব। খেলার মাঠ নেই, স্কুল নেই, নীল আকাশ নেই, মুক্ত পরিবেশ নেই। এই অজস্র নেইয়ের জগৎ থেকে মুক্তি চাইছে শিশুমন। মনোজগতে চলছে তোলপাড়, চলছে বিকল্প সন্ধান। কোথায় কী ভাবে কে কেমন মুক্তি চাইছে, বিকল্প খুঁজছে তা অনুমান করাই মুশকিল। আকাশের পাখি আর কতদিন লকডাউনের খাঁচায় বন্দি থাকবে, কে জানে? ছবি-প্রতীকি, ঘটনার সঙ্গে কোনও সাযুজ্য নেই