নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে খড়গপুর শহরে সর্বাধিক আক্রান্ত হয়েছেন রেলকর্মী এবং তাঁদের পরিবার সদস্যরা। আজ অবধি গণনা করলে সংখ্যাটা ১৫০০ ছাড়িয়ে যাবে নিশ্চিত করেই। যদিও তা’বলে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সরে আসেননি তাঁরা। পেশাগত ভাবে তাঁরা যেমন রেল পরিষেবা বজায় রেখেছেন মসৃণ ভাবে তেমনই এগিয়ে এসেছেন বৃহত্তর সমাজের প্রতি নিজস্ব কর্তব্য পালনে। চূড়ান্ত ব্যস্ততার মধ্যেই তাঁরা আয়োজন করে ফেলেছিলেন একটি রক্তদান শিবিরের যা রীতিমত সফল হয়েছে বলে দাবি করলেন আয়োজকরা।
রবিবার দক্ষিণ পূর্ব রেলের মেন্স ইউনিয়নের খড়গপুর শাখার কারখানা ও ওপেন লাইনের সদস্যদের উদ্যোগে এই রক্তদান শিবির আয়োজিত হয় রেল শহরের রেলওয়ে বয়েজ স্কুলের সামনে খড়গপুর ডিস্ট্রিক্ট স্কাউট কার্যালয়ে। এই শিবিরে ৪জন মহিলা সহ মোট ৫২জন রক্তদান করেছেন বলে জানালেন মেন্স ইউনিয়নের সহকারি সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত মল্লিক। সুকান্তবাবু জানিয়েছেন, ‘করোনাকালে কোভিড বিধি মেনে আমরা ৬০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিলাম। শুধু কর্মীরাই নয় কর্মী পরিবারের সদস্য সদস্যারাও এগিয়ে এসেছেন এই মহৎ উদ্যোগে। অন্ততঃ ৫জন ছিলেন যাঁরা তাঁদের জীবনের প্রথম রক্ত প্রদান করেছেন।’
সুকান্ত বাবু আরও জানিয়েছেন, ‘ আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম বা দ্বিতীয় দফার ডোজ নিয়েছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তিও এদিন রক্ত দিয়েছেন। এ ব্যাপারে মানুষের মধ্যে কিছুটা ভয়, কিছুটা ভ্রান্তি কাজ করে থাকে যে টিকা নিলে রক্তদান করা যায়না। আমরা আইসিএমআরের নির্দেশিকা দেখিয়ে রক্তদাতাদের সন্তুষ্ট করেছি যেখানে বলা হয়েছে টিকা নেওয়ার ১৪দিন পর থেকে যে কেউ রক্তদান করতে পারেন। এই ভয় বা ভ্রান্তি দূরকরাটা এই শিবিরের সবচেয়ে বড় সাফল্য।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের অপর সহকারি সাধারণ সম্পাদক অজিত ঘোষাল। উদ্বোধন করেন ইউনিয়নের প্রবীণ নেতা অমল মজুমদার। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পক্ষ থেকে এদিন রক্ত সংগ্ৰহ করা হয়।
খড়গপুর শহরের অন্য একটি অনুষ্ঠানে আগের দিন অর্থাৎ শনিবার খড়গপুর শহরের তালবাগিচা যুবসঙ্ঘ দুর্গামন্দির প্রাঙ্গনে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল অবলম্বন ওয়েল ফেয়ার সোসাইটি। তাদের দ্বিতীয় বর্ষ রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন খড়গপুর মহকুমা শাসক আজমল হোসেন, খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখার্জী, খড়গপুর পৌর প্রশাসক প্রদীপ সরকার এবং স্থানীয় দুই প্রাক্তন কাউন্সিলর স্মৃতিকনা দেবনাথ ও জহরলাল লাল সহ শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বরা।