নিজস্ব সংবাদদাতা: পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদা রেল স্টেশনে ট্রলি ব্যাগের মধ্যে খুন করে ঢুকিয়ে রাখা কলকাতার ব্যবসায়ীর দেহের রহস্য ভেদ প্রায় করেই ফেলল খড়গপুর রেল পুলিশ। দিঘার হোটেল লিজ নেওয়ার সূত্রে পরিচিত দালাল যোগেই এই খুন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। আর এই খুনের পেছনে ব্যাবসায়ীকে মহিলার লোভ দেখিয়েই দিঘার পরিবর্তে অন্য জায়গায় নামতে প্রলোভিত করা হয়েছিল বলেই পুলিশের একটি অংশ মনে করছে।
দীর্ঘ তদন্তের পর এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে রেলের খড়গপুর জেলা পুলিশ। পুলিশের দাবি উদ্ধার হয়েছে খুনের আগে মৃত ব্যবসায়ীর সঙ্গে থাকা ৬ লক্ষ টাকাও। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
পুলিশের দাবি মূল অভিযুক্ত রাজুকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর জানতে পারা গেছে , ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে ২৪ তারিখ কলকাতা থেকে দিঘার উদ্দেশ্যে রওনা হন হাসান। দালাল রাজুর ফোন পেয়ে রামনগর এলাকায় বাস থেকে নেমে যান তিনি । এরপর রাজুর কথা মতো ওই এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে ওঠেন দু’জন। ওই বাড়িতেই বান্ধবীর সঙ্গে থাকত রাজু। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিন রাতেই বান্ধবীর ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হাসানকে খুন করে রাজু। ভারী বস্তুু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাতও করা হয়। এরপর প্রমাণ লোপাটে দেহ ট্রলি ব্যাগে ভরে তুলে দেওয়া হয় মেচেদা লোকালে।
বিষয়টি জানাজানি হতেই রাজুর বান্ধবীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। যদিও ঘটনার দিন বান্ধবী সেখানে ছিল না বলেই জানিয়েছে রাজু। এ প্রসঙ্গে খড়গপুর জিআরপির পুলিশ সুপার আউধেশ পাঠক বলেন, “ধৃতদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। শ্বাসরোধ করার পর যে ভারী জিনিস দিয়ে হাসানের মুখে আঘাত করা হয়েছিল সেটি ও রক্ত মোছার কাজে ব্যবহৃত তোয়ালেটি উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃত তিনজন ছাড়া ঘটনার সঙ্গে অন্য কারও যোগ রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” প্রসঙ্গত, ২৫ ফেব্রুয়ারি মেচেদা লোকাল থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটি ট্রলি ব্যাগ। সেটি খুলতেই মেলে বউবাজারের ব্যবসায়ী হাসান আলির দেহ। পরিবারের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩ জনকে।
যে মানুষটার টাকা নিয়ে দিঘায় যাওয়ার কথা সে কেন মাত্র কয়েক কিলোমিটার আগে রামনগরে নেমে গেল এই তত্ত্ব ভাবিয়েছে পুলিশকে। পুলিশের একটি অংশের ধারনা মহিলার প্রলোভন দেখিয়েই নামানো হয় হাসানকে। তবে সেই মহিলা অভিযুক্ত রাজুর বান্ধবী নাকি অন্য কেউ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।