নিজস্ব সংবাদদাতা: জল আর আগুনের কাছে যেতে মানা ছিল তাঁর কিন্তু সমুদ্র স্নানের লোভ সামলাতে পারেননি। বিশেষ করে বন্ধুরা জলে নেমে হৈ চৈ করছে, ঢেউ ভাঙছে দেখার পর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি যুবক। একবার নামেই দেখা যাক ভেবেই বোধহয় নেমে পড়েছিলেন কিন্তু সমুদ্র যে সমুদ্রই! নিমেষেই ঢেউয়ের গ্রাসে চলে গেলেন যুবক। অনেক খোঁজাখুঁজির পর যখন তাঁর দেহ মিলল তখন তিনি চলে গেছেন অনেক দুরে। সেখান থেকে দেহ মিলল বটে কিন্তু প্রাণ মিলল না।বুধবার দুপুরে এমনই মর্মান্তিক ঘটনায় মৃত্যু হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ী থানা এলাকার এক যুবকের।
দিঘা পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম অজয় মুর্মু। কেশিয়াড়ী পঞ্চায়েত সমিতির কুসুমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কিয়ারচাঁদ নামক গ্রামে বাড়ি ২৮ বছরের ওই যুবকের। এ ঘটনায় মৃত যুব মুর্মু(২৮)। বুধবার সকালেই ৪২ জনের একটি দলের সঙ্গে ট্রাকে চেপে দিঘায় এসেছিলেন পেশায় দিনমজুর অজয়। তাঁর ভাইও সঙ্গে ছিলেন। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ নিউ দিঘার মেরিনা ঘাটে স্নানে নেমেই ঘটে বিপত্তি।
জানা গেছে, তাঁর দুই বন্ধুকে সমুদ্রে স্নান করতে দেখে অজয়ও জলে নেমেছিলেন। সেই দুই বন্ধুর একজন রাজু সোরেন বলেন, ‘অজয়ের মৃগী ছিল। মনে হয় স্নানের সময় ঢেউয়ের ধাক্কায় কিংবা মৃগীতে আক্রান্ত হয়ে গভীর সমুদ্রে তলিয়ে যায় সে। ওকে ভেসে যেতে দেখেই আমরা চিৎকার শুরু করি। সেই চিৎকার শুনেই ছুটে আসেন নুলিয়ারা। তাঁরা অজয়কে উদ্ধারের জন্য সমুদ্রে নেমে এদিক ওদিক খুঁজতে থাকেন। কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।’
জানা গেছে সমুদ্র প্রচন্ড উত্তাল থাকায় বোঝাই যাচ্ছিলনা অজয় কোন দিকে ভেসে গেছে। এদিন জোয়ারের প্রাবল্য ছিল, প্রচণ্ড মোচড় ছিল জলে। ফলে খুব দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সরে যায় অজয়ের শরীর। ফলে সঙ্গে সঙ্গে তার অস্তিত্ব নজরে পড়েনি ফলে দ্রুত খোঁজ পাওয়া সম্ভব হয়নি। ঘন্টাখানেক বাদে দুপুর দেড়টা নাগাদ ১কিলোমিটার দুরে ওল্ড দিঘার জগন্নাথঘাট এলাকায় ভেসে ওঠে অজয়ের মৃতদেহ।
দিঘা থানার ওসি বুদ্ধদেব মাল বলেন,’ খুবই দুর্ভাগ্য যে ঢেউয়ের ধাক্কায় অনেকটাই গভীরে চলে যান ওই যুবক। উদ্ধারকারী নুলিয়ারা প্রায় সাথেই সাথেই তাঁকে উদ্ধারের জন্য জলে নেমেছিল নুলিয়া নামিয়ে তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সম্ভব হয়নি। পরে আপনা থেকেই ভেসে পাড়ে এসে ঠেকে মৃতদেহ।’
এদিকে একবেলার জন্য দিঘা বেড়াতে এসে বন্ধুকে হারিয়ে খুবই ভেঙে পড়েছেন দলের বাকি সদস্যরা। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে। কয়েকজন সেখানে থেকে বাকিরা ফিরে গেছেন কেশিয়াড়ীতে।