নিজস্ব সংবাদদাতা: রবিবার, ছুটির দিনের সাতসকালে হাতির হামলায় এক গৃহস্থের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন ঝাড়াগ্রামের বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের অভিযোগ বারংবার বনদপ্তরকে জানানো স্বত্ত্বেও হাতি তাড়ানোর কোনও উদ্যোগ নেয়না বনদপ্তর। আর সে কারণেই স্থানীয় বাসিন্দাদের ফসল নষ্ট, ঘরবাড়ি, সম্পত্তি নষ্ট করছে হাতির পাল। আর এবার বনদপ্তরের উদাসীনতায় প্রাণ হারালেন একজন মানুষ। বিক্ষুব্ধ জনতা ঝাড়গ্রাম-লোধাশুলি রাজ্যসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ঘন্টার পর ঘন্টা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ঝাড়গ্রাম শহরের প্রবেশের কিছুটা আগেই রাজ্যসড়ক ঘেঁষে কলাবনী গ্রাম। সেই গ্রামেরই মধ্যবয়স্ক গৃহস্থ পাড়ু মাহাত। সাতসকালেই বাড়ির গৃহপালিত পশুদের জন্য জঙ্গলে ঘাস-পাতা সংগ্রহে গেছিলেন পাড়ু। পাড়ু বুঝতেই পারেননি বর্ষায় নতুন করে গজিয়ে ওঠা ঘন জঙ্গলের আড়ালেই দাঁড়িয়েছিল একটি ঘাতক দাঁতাল। কিছু বুঝে উঠার আগেই হাতিটির নাগালের মধ্যে গিয়ে পড়েন তিনি। তখন হাতিটি শুঁড়ে পেঁচিয়ে ওপরে তুলে মাটিতে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির।
ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ঝাড়গ্ৰাম শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দুরের কলাবনী, শালবনি, ধিতখাম সহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা।ঘন জঙ্গল ঘেরা এই গ্রামগুলির অধিবাসীরা অভিযোগ করতে থাকেন একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর দিনের পর দিন জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে দিচ্ছে, কখনও আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে জঙ্গলে। ফলে জঙ্গল ছেড়ে হাতির দল হানা দিচ্ছে লোকালয়ে। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ এই এলাকায় প্রায়ই হাতির একটি দল স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেছে কিন্তু হাতিকে তাড়ানোর কোনও গরজ নেই বনদপ্তরের। ফল স্বরুপ প্রাণহানি থেকে শুরু করে ফসল, ঘরবাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বনদপ্তরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ এনে পথ অবরোধ শুরু করেন ওই গ্রামগুলির বাসিন্দারা।
যদিও লকডাউনের কড়াকড়ির জন্য ওই রাস্তায় যাত্রীবাহি যান চলাচল নেই কিন্তু মালবাহী লরি, জরুরি পরিষেবা ইত্যাদি ব্যাহত হয় এই অবরোধে। মুশকিলে পড়ে যান বিভিন্ন আশু কাজে বাইরে বের হওয়া বাইক আরোহীরা। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন পুলিশ আধিকারিকরা। যদিও জনতাকে অবরোধ থেকে সরানো যায়নি। ঘন্টা কয়েক এই অবরোধ চলার পর বনদপ্তরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে এসে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় অবরোধ প্রত্যাহার হয়। বিক্ষোভকারীরা অবশ্য জানিয়ে গেলেন, অবিলম্বে যদি বনদপ্তর ব্যবস্থা না নেয় তাহলে বড়সড় আন্দোলনের পথে যাবেন তাঁরা।