নিজস্ব সংবাদদাতা: বিজেপি তো আছেই তার সঙ্গে যোগ হয়েছে শুভেন্দু অধিকারী ফ্যাক্টর। রাজ্য থেকে ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জীর ব্যর্থতা পদে পদে প্রমাণিত। পঞ্চায়েত আর লোকসভায় ধ্বস নেমেছে দলে। চূড়ামনি মাহাতর মন্ত্রী পদ থেকে অপসারন কিংবা উমা সরেনকে প্রার্থী না করা, আদিবাসীদের সামাজিক সংগঠনের সমর্থন পাওয়ার আশায় বীরবাহা সরেনকে লোকসভায় প্রার্থী করা ইত্যাদি কোনও ফর্মূলাই দলের রক্তক্ষরণ ঠেকাতে পারেনি। খুব সত্যি কথা বললে বলতেই হয় স্বয়ং মমতা ব্যানার্জী জাদুও আর জঙ্গল মহল উদ্ধারের হ্যারি পটার নয়। বরং নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে জঙ্গলমহলে শুভেন্দু অধিকারীর স্বাধীন উদ্যোগ।
সম্ভবত সেই সব কথা মাথায় রেখেই এবার কাউকেই বাদ না দিয়ে সবাইকে নিয়ে ২০২১ উৎরানোর চেষ্টা। তাই উমা সরেন, চূড়ামনি মাহাতের পাশাপাশি জেলা কমিটিতে জায়গা হয়ে গেছে শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ লালগড়ের তন্ময় রায় কিংবা জামবনীর নিশীথ মাহাতেরও। ফলত: বুধবার তৃণমূলের জেলা ও ব্লক কমিটি গঠনে কোনও চমক নেই খালি এক জায়গা থেকে কাউকে সরিয়ে অন্য জায়গায় পুনর্বাসন দেওয়া ছাড়া নতুন কমিটি গুলির আর বড় কিছু করা সম্ভব হয়নি। সালে হবে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন।
এদিন তৃণমূলের ঝাড়গ্ৰাম জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু এবং জেলা নেতারা নতুন পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করেন।আর সেই ঘোষণা অনুযায়ী ঝাড়গ্ৰাম জেলায় তৃণমূলের ৯ টি ব্লক কমিটির মধ্যে ৩ টি ব্লক কমিটির সভাপতি পদে এসেছেন নতুন মুখ। সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি পদে এবং দলের জেলা মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী পদেও রয়েছেন নতুন মুখ। এদের মধ্যে গোপীবল্লভপুর ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি পদে শঙ্কর প্রসাদ হাঁসদা এর বদলে এসেছেন হেমন্ত ঘোষ,নয়াগ্ৰাম ব্লকে উজ্জ্বল দত্ত এর বদলে শ্রীজীব সুন্দর দাস হয়েছেন ব্লক সভাপতি, সাঁকরাইলে সোমনাথ মহাপাত্র এর বদলে কমল রাউৎ।
একই ভাবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ঝাড়গ্ৰাম জেলা সভাপতির পদে দীর্ঘদিনের লড়াকু ছাত্র নেতা সত্যরঞ্জন বারিক এর বদলে দায়িত্বে এসেছেন রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আর্য ঘোষ।আর মহিলা সংগঠনের দায়িত্বে নতুন মুখ হিসাবে এসেছেন তৃণমূলের ‘শহীদ’ পরিবারের সদস্য অনুশ্রী কর।
আজকে ঝাড়গ্ৰাম জেলা তৃণমূলের এই সাংগঠনিক রদবদলের ফলে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে উচ্ছাস চোখে পড়লেও। কারো কারো মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। কারণ সবটাই যোগ্য নেতৃত্বের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়নি বলে কিছু তৃণমূলের কর্মীর অভিমান রয়েছে। কিন্তু আবার বিধানসভা নির্বাচনের সামনে নতুন জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মুর নেতৃত্বে এই ঝাড়গ্ৰাম জেলা তৃণমূলের এই সাংগঠনিক রদবদল প্রয়োজন ছিল বলে কেউ কেউ মনে করছেন।
যদিও বড় প্রশ্ন হল পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে প্রায় প্রতিটি বিধানসভা ক্ষেত্রেই হেরে থাকা তৃনমূল কোনও নতুন ম্যাজিক দেখিয়ে বিধানসভা আসনগুলি আদৌ ধরে রাখতে পারবে কিনা! কারন প্রধান শত্রু বিজেপির পাশাপাশি জঙ্গল মহলে শুভেন্দু অধিকারী নতুন বিরোধি শক্তি হিসেবে তৃণমূলের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন এমন সম্ভবনার কথা জঙ্গলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে।