নিজস্ব সংবাদদাতা: মাস খানেক আগে নিজের ফেসবুক পেজে গর্জে ওঠে শহরের প্রবীণ তৃনমূল নেতা জহরলাল পাল মন্তব্য করেছিলেন, “দলের জন্য যাঁরা ঘাম আর রক্ত ঝরান তাঁদের মূল্য নেই দলে। দলে তাঁরাই পদ পান যাঁরা দলের ক্ষতি করেন আর বদনাম করে বেড়ান।” মাস খানেক পর মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তৃনমূল কংগ্রেস জেলার পাশাপাশি ব্লক ও পৌরসভা কমিটির তালিকা ঘোষনা করতে গিয়ে খড়গপুর পৌর এলাকার যুব সংগঠনের সভাপতি হিসাবে সেই জহর পালের ছেলে অসিত পালেরই নাম ঘোষণা করল তৃনমূল।
এটা ঘটনা যে অসিত পাল বা ছোটকা শহরের তৃণমূলীয় নেতৃত্বে একটি অপরিহার্য নাম কিন্তু এটাও ঘটনা যে তাঁকে সভাপতি ঘোষনার পেছনে সেই রসায়ন যতটা না কাজ করেছে তার চেয়েও বেশি কাজ করেছে জহর পালকে সন্তুষ্ট করার প্রক্রিয়া এমনটাই মনে করছেন দলেরই একাংশ। আর যে কারনে বাঁ হাতে মনসা পুজা করা হয়েছে।
গত ২১ শে জুলাইয়ের কয়েকদিনের মাথায় জেলার নতুন কমিটি ঘোষনা করার পরই ভেঙে গিয়েছিল ব্লক ও পৌরসভার কমিটিগুলি। খড়গপুর শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পান্ডের মেয়াদেরও ইতি হয়। পরবর্তী শহর সভাপতি কে হবেন তাই নিয়ে জল্পনা চলতে থাকে। বিধায়ক প্রদীপ সরকারকে কোঅর্ডিনেটর করায় শহর সভাপতির পদে তাঁর আসার জায়গা ছিলনা। এরই মধ্যে দলে গুরুত্ব না পাওয়ায় প্রকাশ্যে ব্যানার টাঙিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন দেবাশিষ চৌধুরী বা মুনমুন। কিছুটা দল ছাড়ার প্রচ্ছন্ন হুমকির মুখেই ২দিনের মধ্যে জেলা কমিটির মুখপাত্র হিসাবে বহাল হয়ে যান তিনি।
এর কদিনের মধ্যেই কার্যত ওই ব্যানারকেই নিশানা করে জহর পাল তোপ দাগেন ফেসবুক পেজে। ‘অনেক হয়েছে, আর নয়।’ বলে জানিয়ে দেন, দলের যারা বদনাম করে তারাই পদ পায় আর যারা ঘাম ঝরায়, রক্তমাংস এক করে দলের জন্য খেটে বেড়ায় তাঁদের গুরুত্ব নেই।
সেই জহর পালকে হয়ত এবার গুরুত্ব দেওয়াই যেত। প্রদীপ সরকার আর দেবাশিস চৌধুরীর নতুন পদে চলে যাওয়ায়
শহর সভাপতি পদের দাবিদার হিসেবে রয়ে গেছিলেন প্রাক্তন সভাপতি রবিশঙ্কর পান্ডে। কিন্তু তবুও সাহস দেখাতে পারলনা দল। পদ ঘোষনা না করেই ছেড়ে দেওয়া হল একমাত্র খড়গপুর শহরেই!
যদিও জহর পালকে কিছুটা ঠান্ডা আর শহর সভাপতি পদে না আনতে পারার ঘাটতি মেকআপ করতেই অসিত পালকে সভাপতি ঘোষনা করা হল শহরের যুব সংগঠনের। যদিও ফুল বেছানো নয় সেই পদ। তীব্র প্রতিদ্বন্দিতার মুখেই চলতে হবে অসিতকে। দলের মধ্যেই রয়েছে সেই কাঁটা। অসিতের অনুগামীদের দাবি সেই কাজ পারবেন অসিত। সন্ধ্যা থেকেই তাই অসিতকে ঘিরে অনুগামীদের উল্লাস ফেটে পড়েছে।