শনিবার উদ্ধার হওয়া মৃত ইরাবতী ডলফিন |
নিজস্ব সংবাদদাতা: ফের রূপনারায়ন ও হুগলি সঙ্গমস্থল পূর্ব মেদিনীপুরের কুঁকড়াহাটির চরে মিলল একটি পুর্ন বয়স্ক ইরাবতী ডলফিন। স্থানীয় হরিবল্লভপুর ও নটপটিয়া এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার জোয়ারের সময় ভেসে এসেছিল প্রায় ১০০কিলো ওজনের এই ডলফিনটি। তারপর চড়ায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পূর্ব মেদিনীপুর বনদপ্তরের লোকজন। ডলফিন নিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য যায় স্থানীয় মহিষাদল রাজ কলেজের জীববিদ্যা বিভাগের পড়ুয়ারাও। যদিও তাদের তথ্য সংগ্রহ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বনদপ্তরের বিরুদ্ধে। বনদপ্তর আবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এদিকে হুগলি ও রূপনারায়নে বারংবার ডলফিনের মৃতদেহ মেলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
শনিবার উদ্ধার হওয়া স্ত্রী ইরাবতী ডলফিনটি প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট লম্বা এবং তার ল্যাজের অংশটির দৈর্ঘ্য দেড় ফুট। পাখনার অংশের বেড় ছিল ২ফুট ৯ইঞ্চি। আপাতভাবে ডলফিনটির শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। হয়ত সেই কারনেই বনদপ্তর এটিকে স্বাভাবিক, বয়সজনিত কারনে মৃত্যু বলেছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
মহিষাদল রাজ কলেজের জীববিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শুভময় দাস যিনি গত ২দশক ধরে ডলফিন নিয়ে গবেষনা করছেন বলেন, ”গত ৬০দিনে উক্ত অববাহিকায় আমরা ১২টি ডলফিন মারা যাওয়ার তথ্য পেয়েছি। এর মধ্যে ৫টি শুশুক প্রজাতির বা গাঙ্গেয় ডলফিন বাকি ৭টি ইরাবতী প্রজাতির। শেষ ইরাবতীর দেহটি মিলেছিল এই মাসের ৭তারিখ, গেঁওখালিতে, আজকের ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরে।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
দাস আক্ষেপের স্বরে বলেছেন, ‘আজ আমাদের ডলফিনের ধারে কাছেই ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। তথ্য সংগ্রহকারী দলটিকে কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়ানো হয়েছে। তাই মৃত্যুর কারন বলতে পারবনা। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডলফিন গুলি মারা পড়ছে অপরিকল্পিত মৎস শিকার আর জলযানের প্রপলারের আঘাতে।”
বিশেষজ্ঞদের অভিমত বিপন্ন প্রায় প্রানীগুলিকে বাঁচাতে যতটা তৎপর হওয়া উচিৎ তার ছিঁটেফোঁটাও নজরে পড়ছেনা। অনেকটাই হাতুড়ের ভূমিকা পালন করছে বনদপ্তর। এর প্রকৃষ্ট উদাহরন কয়েকমাস আগে এই জেলারই ভূপতিনগরে বনদপ্তরের তাড়ায় মৃত্যু হওয়া একটি পুর্নগর্ভা ও আসন্নপ্রসবা বটলনোজ ডলফিন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ইরাবতী ডলফিন মুলতঃ সামুদ্রিক ডলফিন এবং দক্ষিন ও দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার সমুদ্রই এর বিচরন ভূমি। যদিও পাশাপশি মেকং সহ তিনটি নদিতে এর দেখা মেলে। বঙ্গোপসাগরের খাড়ি নদি খাতে ব্যাপক জলস্ফীতির সময় কখনও কখনও ভুল করে ঢুকে পড়ে এরা আর সেই সময় অজানা অচেনা পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।