নিজস্ব সংবাদদাতা: ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে নতুন ভাবনায় খড়গপুর শঙ্খমালা। খড়গপুর, দ্য মিনি ইন্ডিয়া! কত ভাষাভাষি মানুষের বাস এখানে? সাংস্কৃতিক চর্চার এই সংগঠন শঙ্খমালার সম্পাদক কৃষানু আচার্যের অকপট স্বীকারোক্তি, ‘আমরা জানিই না!’ এটা শুনে খড়গপুরের অনেকেই নিশ্চিত ভাবে আঙুলের কড়া গুনে বলতে শুরু করবেন বাংলা, হিন্দি, ওড়িয়া, তেলেগু, পাঞ্জাবি আর এখানে এসে যাঁরা থমকে যাবেন তাঁদের জন্য বলা শঙ্খমালা এবার ১১টি ভাষার মানুষদের সামিল করেছিলেন তাঁদের মঞ্চে। আরও ছিলেন তামিল, মারাঠি, সাঁওতালি, গুজরাটি, উর্দু, সংস্কৃত ভাষায় কথা বলেন এমন মানুষেরা।
আপাততঃ ১১টি ভাষার মানুষকে এদিন শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর পরও যিনি বলেন, আমরা জানিনা, তাঁদের নিরন্তন খোঁজকেই এবছরের ভাষা দিবসের শ্রেষ্ঠ পাওয়া বলতেই হয়।
শঙ্খমালার সপ্তম বছরের এই অনুষ্ঠানটি হয়ে গেল খড়গপুর শহরের ট্রাফিক এলাকার রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ সোসাইটির হলে। সমবেত সঙ্গীত আর সমবেত আবৃত্তির পাশাপাশি এদিনের বাড়তি পাওনা ছিল সোনালী মিত্র ও বান্টি দের স্বরচিত কবিতা পাঠ।
২১শে ফেব্রুয়ারি খড়গপুর শহরের রিপোর্টাস ক্লাব ট্রাফিক স্কুলে প্রতিবছরের মত এবছরও জঙ্গলমহল অনন্য সম্মান প্রদান ও সারা বাংলা কবিতা উৎসব পালন করল ট্রাফিক হাই স্কুলে। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের কয়েকজনকে সম্মান প্রদান করা হয় সমাজে তাঁদের অবদানের জন্য।
মেদিনীপুর শহরে প্রতিবছরের মতই গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির উদ্যোগে এবারেও ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে একুশে সম্মান প্রদান করা হয়েছে। সম্পাদক কামরুজ্জামান জানালেন, ‘এবছর দুই শিল্প ব্যক্তিত্ব সঙ্গীত গুরু জয়ন্ত সাহা এবং ঝাড়গ্রামের শিল্পকলা শিল্পী সঞ্জীব মিত্র কে এই সম্মান প্রদান করা হয়েছে। মানপত্র ও পুষ্পস্তবকের পাশাপাশি দুজনের হাতেই ১০হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। সংগঠনের শিল্পী কলাকুশলীরা তাঁদের বিভিন্ন সৃষ্টির মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভাষা শহিদদের।
২১শে ফেব্রুয়ারি জেলার সরকারি অনুষ্ঠান হয়েছে জেলার তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর প্রাঙ্গনে। নৃত্য, সঙ্গীত, স্বরচিত কবিতা পাঠের পাশাপাশি ছিল ভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা চক্র। দুই শহরের বাইরে চন্দ্রকোনা রোড, বেলদা, ঘাটাল, দাসপুর প্রভৃতি জায়গা থেকেও ভাষা দিবস পালনের খবর এসেছে।
বেলদা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উদযাপন কমিটি এদিন একুশে সম্মান তুলে দিয়েছে দীপক কুমার মাইতি, রোশনারা খান ও যূথিকা দাস অধিকারীর হাতে। দুই বাংলার ১৬৬কবি ও লেখকের সৃষ্টির সাথে শিল্পী সুধীর মাইতির আঁকা ষষ্ঠ বর্ষের অনুপত্রিকার প্রকাশ হয় এদিন। চন্দ্রকোনা রোডের চৌরাস্তার মোড়ে ভাষা দিবসের বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ র স্থানীয় শাখা।