নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর থেকে দিঘা যাওয়া পথে আপনি হচ্ছেন সেই ভাগ্যবান যিনি দেখতে পাবেন ভারতীয় বায়ু সেনা বা INDIAN AIR FORCE য়ের জঙ্গি বিমানের ওঠা নামা। আপনার চার চাকা কিংবা বাইক ৬০ নম্বর বালেশ্বর-রানীগঞ্জ জাতীয় সড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে দেখে নিতে পারেন দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার ব্যাপী ঝকঝকে রান ওয়েতে ( RUNWAY) ভারতীয় বায়ুসেনার জঙ্গি বিমানের ওঠা নামা। একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে সারা দেশের ১৩টি জায়গাকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই বিশেষ সুবিধা যুক্ত রানওয়ে বানানোর জন্য যার মধ্যে বেলদার এই পাঁচ কিলোমিটার জায়গা রয়েছে। বুধবার সেই রানওয়ে বানানোর প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গেল।
একটি বিশেষ সূত্র জানিয়েছে ৬০নম্বর(NH-60) জাতীয় সড়কের শ্যামপুরা থেকে বাখরাবাদ বা পোক্তাপোল অবধি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ব্যাপী ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর তৈরি করছে আপৎকালীন যুদ্ধ বিমান ওঠানামার ব্যবস্থা তথা বায়ুসেনার ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিং ফেসিলিটি। পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে জাতীয় সড়কের যাতায়তকারি দুটি লেনের মধ্যবর্তী ডিভাইডারের যে অংশে ফুলের গাছ বা বাগান রয়েছে সেই অংশটিই সম্প্রসারিত করা হচ্ছে ৩০ মিটার।
এখানেই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে শক্তপোক্ত রানওয়ে তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তারই প্রাথমিক কাজ হিসাবে বুধবার ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের দু-দিকে থাকা সমস্ত গাছ গুলিকে কেটে পরিস্কার করতে শুরু করেছে বনদপ্তর। রাস্তা সম্প্রসারণের কাজও শুরু হয়েছে। মাপজোক শুরু করেছেন সার্ভেয়াররা। চীনের মত শক্তিশালী দেশের সঙ্গে যখন ভারতের টানটান উত্তেজনার পরিস্থিতি সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বয়ুসেনার এই পরিকাঠামো গত উন্নতির প্রক্রিয়া যথেষ্টই ইঙ্গিত বাহি। যদিও একটি সূত্র জানাচ্ছে এই পরিকল্পনা বহুদিন আগের। কিছু অনিবার্য কারনবশত তা স্থগিত ছিল। এখন আবার তা চালু করা হল।
প্রশ্ন উঠছে এই জায়গা থেকে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বিমানঘাঁটি তথা এশিয়ার বৃহত্তম জঙ্গি বিমান ঘাঁটি কলাইকুন্ডার (Kalaikunda Air Force Station)দূরত্ব মাত্র ৫০ কিলোমিটার অন্য দিকে ৪০কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে সালুয়াতে (Salua Air Base)রয়েছে এয়ার বেস ক্যাম্প। তা স্বত্ত্বেও কেন এই বাখরাবাদ এলাকাটিকে বেছে নেওয়া হল? বায়ুসেনার পক্ষে এর জবাব কি আছে জানা নেই তবে সমর বিশেষজ্ঞদের মতে এটি ভারতের রনকৌশলের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিনে বিস্তৃত বঙ্গোপসাগর থেকে ভারতের মূল ভূখণ্ডে সরাসরি প্রবেশের জন্য শত্রু এই রুট ব্যবহার করতে পারে সহজেই। ভারত-পাক যুদ্ধ এবং বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তান বায়ুসেনা এই পথে হামলা চালিয়েছিল যা প্রতিহত করা হয় কালাইকুন্ডা থেকেই। এবার প্রয়োজনে ৫০কিলোমিটার আগে ফাঁকা জায়গায় এগিয়ে থাকা যাবে।
পাশাপাশি ভারত মহাসাগর বা বঙ্গোপসাগরে দেশের নৌবহরকে সাহায্য করা কিংবা শত্রুর নৌবহরের ওপর নজরদারি করার সময়েও জরুরি ভিত্তিতে এই স্থানে অবতরণ করা যাবে। আর তার চেয়েও বড় কথা কলাইকুন্ডা বিমান ঘাঁটিকে রক্ষা করার কাজেও এই রানওয়ে ব্যবহৃত হতে পারে।
ঘটনা যাই হোকনা কেন দিনের শেষে সব চেয়ে খুশি হবেন পথচারী, পর্যটকরা। বাইক কিংবা চার চাকার পাশাপাশি যদি পাশের রানওয়ে দিয়ে একটি বিমান ছুটে যায়, কার না ভাল লাগবে?