নিউজ ডেস্ক: গাব্বায় ভারতের ঐতিহাসিক জয়। প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করে ৩২৮ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে নিল ভারত। পুরোটাই সম্ভব হল শুভমান গিল, চেতেশ্বর পূজারা, ঋষভ পন্থদের দাপুটে পারফরম্যান্সে।সেইসঙ্গে চার ম্যাচের সিরিজ ২-১ জিতে নিল। শুভমন ও পূজারার জুটিতে জয়ের সম্ভাবনা দেখছিল ভারত। সেই আশা আরও জাগিয়ে তোলে ঋষভের ব্যাটিং। শেষপর্যন্ত গাব্বায় টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে বাজিমাৎ ভারতের। ভাঙাচোরা দল নিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে চিৎপাত করে সিরিজ জিতে নিল ভারত। ৮৯ রানে অপরাজিত থেকে গেলেন পন্থ। চার মেরে জয়ের আনন্দ এনে দিলেন তিনি। শেষপর্বে তাঁকে সঙ্গ দিলেন অভিষেক টেস্টে প্রথম ইনিংসে দুরন্ত অর্ধশতরানকারী ওয়াশিংটন সুন্দর।
জয়ের জন্য যখন দশ রান দরকার, তখন অবশ্য রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লায়নের বলে আউট হয়ে যেতে হয় তাঁকে। ২৯ বলে ২ টি চার ও ১ একটি ছয়ের সাহায্যে ২২ রান করেন তিনি। এরপর শার্দূল ঠাকুরও ২ রান করে আউট হন। তিনি আউট হওয়ার সময় ভারতের প্রয়োজন ছিল ৩ রান। এরপর নভদীপ সাইনি নামেন। কিন্তু তাঁকে কোনও বল খেলতে হয়নি। তার আগেই বাউন্ডারি মেরে দলকে জয়ের শিখরে পৌঁছে দেন ঋষভ।
এই সিরিজ মূলত তরুণ ক্রিকেটারদের দাপটেই পকেটে পুরল আজিঙ্কা রাহানের ভারত। চোট আঘাতের সমস্যায় জর্জরিত ভারত যেভাবে লড়াই করেছে, তার কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নন। প্রথমসারির ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন, তা দুহাতে কাজে লাগিয়েছেন তরুণ ক্রিকেটাররা।
এর আগের ম্যাচেই দুরন্ত সেঞ্চুরি করেছিলেন ঋষভ। রান তাড়া করতে নেমে সেঞ্চুরি করে অবশ্য আউট হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থেকে হনুমা বিহারী ও আর অশ্বিন দলের হার রুখে দিয়েছিলেন। এই ম্যাচে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন ঋষভ। মায়াঙ্ক অগ্রবাল আউট হয়েছিলেন ২৬৫ রানে। সেখান থেকে পন্থের সঙ্গে জুটিতে মূল্যবান ৫৩ রান যোগ করেন তিনি। মায়াঙ্ক ৯ রান করে আউট হন। ঋষভ পন্থ ১৩৮ বলে ৮৯ করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল ৯ টি চার ও একটি ছয়।
গাব্বার পঞ্চম দিনের পিচে ভারতের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য ছিল ৩২৪ রান। সোমবার অস্ট্রেলিয়া ভারতের সামনে ৩২৮ রানের লক্ষ্য রেখেছিল। দিনের শেষে ভারতের রান ছিল বিনা উইকেটে ৪। পঞ্চম দিন সকালে রোহিত শর্মা দ্রুত ফিরে গেলেও এতটুকু না দমে ইনিংস এগিয়ে যান শুভমান গিল ও চেতেশ্বর পূজারা। পূজারা একদিকে ক্রিজ আঁকড়ে পড়েছিলেন। অন্যদিকে, তরুণ শুভমন রান এগিয়ে নিয়ে চলেন স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে। ফলে অস্ট্রেলিয়াই চাপে পড়ে যায়।
অন্যদিকে, পূজারা ও শুভমানের জুটিতে ডিফেন্স ও আক্রমণের যুগলবন্দী ভারতের জয়ের আশা জাগিয়ে তোলে। কিন্তু একেবারে সেঞ্চুরি দোরগোড়া থেকে ফিরে যান শুভমান। ১৪৬ বলে ৯১ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে নাথন লায়নের বলে ব্যাক টু প্যাভিলিয় হতে হত শুভমানকে। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ৮ টি চার ও দুটি ছয়ে। পূজারার সঙ্গে জুটিতে ১১৪ রান যোগ করে যান শুভমান।
এরপর ব্যাট করতে নামেন অধিনায়ক রাহানে। ১ টি চার ও ১ টি ছয়ের সাহায্যে ২২ বলে ২৪ রান করে ফিরে যান তিনি। পূজারার সঙ্গে ৬৫ রান যোগ করেন তিনি। দলের ১৬৭ রানে রাহানে আউট হন। ভারতের তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে। এরপর ২২৮ রানে পূজারা ২১১ বলে ৫৬ রান করে আউট হন। ২৬৫ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন। আউট হন মায়াঙ্ক।
তবে অবশেষে ব্রিসবেনে ইতিহাস গড়ল ভারত। তরুণ খেলোয়াড়দের হাত ধরে গাব্বায় ভারতের এই ঐতিহাসিক জয় সত্যিই প্রশংসনীয়।